বিধায়কদের প্রতিনিধি দল নিয়ে দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা। ফাইল চিত্র
জুলাই মাসেই বাংলার বিজেপি বিধায়কদের একটি দল নিয়ে দিল্লি যেতে চান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্য নিজের বলে চালানোর অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে দরবার করার পরিকল্পনা নিয়েছেনতিনি।
গত শনিবার দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। ওই বৈঠকেই নতুন এই পরিকল্পনার কথা শুভেন্দু জানিয়েছেন।শুভেন্দুর ওই বৈঠকে হাজির এক বিধায়কের কথায়, ‘‘দিন-ক্ষণ ঠিক না হলেও শুভেন্দুদা চাইছেন, বিধায়কদের প্রতিনিধি দল বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করবে। বাংলায় কোন কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ ব্যবহার করে রাজ্য সরকার নিজেদের প্রকল্প বলে চালাচ্ছে তা নিয়ে অভিযোগ জানানো হবে। একই সঙ্গে রাজ্যে ভোটের পরে যে ভাবে সন্ত্রাস চলছে সে বিষয়েও জানানো হবে।’’ বৈঠকে বিজেপি-র অধিকাংশ বিধায়কই হাজির ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে শুভেন্দুর সঙ্গে ১০ জন বিধায়ক যাবেন। সেই তালিকায় থাকতে পারেন অশোক লাহিড়ী, মিহির গোস্বামী, অম্বিকা রায়, মুকুটমণি অধিকারী, নির্মল ধারা,শঙ্কর ঘোষ, নিরজ তামাং জিম্বা-সহ আরও কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক। দলে থাকতে পারেন বিধানসভায় বিজেপি-র মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা এবং বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। শনিবারের বৈঠকে এ-ও ঠিক হয়েছে যে, আগামী শুক্রবার বিধানসভায় বিধায়কদের নিয়ে বসবেন শুভেন্দু। সেখানেই দিল্লি অভিযানের প্রতিনিধি দলে কারা থাকবেন তার তালিকা এবং দিন-ক্ষণ ঠিক হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম বদলে বাংলা আবাস যোজনা করে রাজ্য সরকার নিজেদের প্রকল্প দাবি করছে বলে অনেক দিন থেকেই অভিযোগ তুলছে বিজেপি। রাজ্যে ভোট প্রচারে এসে এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘স্টিকার দিদি’ নামে ডেকেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সস্তায় রেশন থেকে গরিব পরিবারের জন্য বিনামূল্য বিদ্যুৎ-সহ অনেক প্রকল্প নিয়েই বিজেপি-র অভিযোগ রয়েছে। এ বার সেই সব নিয়েই দিল্লিতে দরবার করতে চান শুভেন্দু। বিজেপি চাইছে, অন্য নাম দিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্প ব্যবহারের অভিযোগ এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকও তুলুক। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও যাতে করা হয় সেই দাবিও জানাবে বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দল।
কিছুদিন আগেই পর পর দু’বার দিল্লি গিয়েছেন শুভেন্দু। দু’টি সফরেই তিনি একা যান। প্রথমবার বৈঠক করেন মোদীর সঙ্গে। দুই সফরেই বৈঠক হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে। সেই সময় তিনি মূলত রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ তুলেছিলেন বলেই জানা যায়। তবে দ্বিতীয় সফরে তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের সঙ্গে দেখা করে করোনা টিকাকরণে রাজ্য আলাদা পোর্টাল কেন বানিয়েছে প্রশ্ন তুলে অভিযোগ জানান শুভেন্দু। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলে নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন মনসুখ মাণ্ডব্য। শুভেন্দুর নেতৃত্বে তাঁর কাছেও যেতে পারে বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দল। তবে আর কোন কোন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা হবে, তা এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় স্থির হয়ে যাবে। তার পরেই স্পষ্ট হবে কোন কোন মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ চান শুভেন্দু।