বসিরহাটে মহকুমা শাসকের অফিসে প্রার্থীদের নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি প্রার্থীদের পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ তুলে প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বসিরহাট মহকুমা শাসকের অফিসে গেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অভিযোগ, তাঁদের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। শাসকদল তৃণমূল বাধা দিচ্ছে। তাই মহকুমা শাসকের অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছেন সুকান্ত। সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ ধর্নায় বসেন তিনি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে অশান্তির খবর এসেছে। দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড়, ক্যানিং। বাঁকুড়ার ইন্দাসে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে অশান্তি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সুতি, হরিহরপাড়ার মতো এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে অনেক তাজা বোমা।
এই আবহে বসিরহাটেও বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। বুধবার মহকুমা শাসকের অফিসে যাওয়ার পথে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। আমরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছি। কমিশনকে ইমেল মারফত সমস্যার কথা জানিয়েছি। এখন মহকুমা শাসকের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছি।’’
সুকান্তের আরও অভিযোগ, ‘‘বসিরহাটের বিডিও অফিসে আমাদের প্রার্থীরা যেতেই পারেননি। সেখানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়া সম্ভব নয়। গণতন্ত্র আজ আক্রান্ত। রাজ্যে ভোটের নামে এই প্রহসন করার প্রয়োজন ছিল না। এমন গণতন্ত্র থাকার চেয়ে না থাকা ভাল।’’
মহকুমা শাসকের অফিসে পৌঁছলে সুকান্তদের একসঙ্গে সেখানে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। তাঁদের তরফে চার জনকে ভিতরে গিয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করা হয়। সুকান্তেরা অফিসের ভিতরে গিয়ে মহকুমা শাসকের হাতে প্রার্থিতালিকা তুলে দিয়ে এসেছেন। ওই অফিসে বিজেপি প্রার্থী এবং নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন। দেড় ঘণ্টা অফিসের সামনে ছিলেন তাঁরা।
বিজেপি সূত্রে খবর, মহকুমা শাসকের অফিস থেকে বেরিয়ে সুকান্ত নির্বাচন কমিশনের অফিসে যাচ্ছেন। বিজেপির যে প্রার্থীরা মনোনয়ন দিতে পারেননি, তাঁরা তাঁর সঙ্গে আছেন।
রাজ্য পুলিশে আস্থা নেই বলেও জানান বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ দিয়ে সুস্থ নির্বাচন হবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী লাগবে। আদালত শুধু স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। তা-ও এখনও প্রয়োগ করা হয়নি। তাই কোনও লাভ হচ্ছে না।’’
সুকান্তদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বসিরহাটের তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘বসিরহাটের বিডিও অফিসে যেখানে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ চলছে, সেখানে সুকান্ত বা বিজেপির ছোট-বড় কোনও নেতাই যাননি। প্রার্থী তো দূরের কথা। ওঁরা আসলে প্রার্থী দিতে পারছেন না। সেই হতাশা থেকে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।’’
বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একেবারেই মিথ্যা কথা যে মনোনয়নে কাউকে বাধা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে জানালেই তারা মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো বলেই দিয়েছেন, যদি মনোনয়ন দিতে সমস্যা হয়, আমাদের জানান। আমরা সব বন্দোবস্ত করে দেব।’’