নিয়োগ দুর্নীতি মামলা অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। —ফাইল চিত্র।
ইডির মামলায় সোমবার বিচার ভবনে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিলেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। জেল হাসপাতালের বিছানা থেকে লাল কম্বল গায়ে, মাথায় মাফলার জড়িয়ে ভার্চুয়ালি হাজির হন তিনি। বিচারককে নিজেই জানালেন, আদালতে হাজিরা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি ইচ্ছুক। শুয়ে শুয়ে পিঠে ব্যথা হয়ে গিয়েছে বলেও আদালতে জানান সুজয়কৃষ্ণ। ঘটনাচক্রে সিবিআইয়ের মামলায় তাঁর আগাম জামিনের আর্জি সোমবারই খারিজ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট।
সোমবার নিম্ন আদালতেও নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডির মামলার শুনানি হয়েছে। সিবিআইয়ের মামলায় আগে অসুস্থতার কারণে নিম্ন আদালতে তিনি অনুপস্থিত থাকলেও, ইডির মামলায় ভার্চুয়ালি হাজিরা দিলেন সুজয়কৃষ্ণ। নিজের শারীরিক সমস্যার কথাও তিনি আদালতে তুলে ধরেন। সুজয়কৃষ্ণ জানান, তাঁর বুক ধড়ফড় করে। পা কাঁপে। ঠিক ভাবে হাঁটতে পারেন না। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই এই সমস্যা বলে জানান তিনি। মাঝে ডায়েরিয়া হয়েছিল বলেও আদালতে জানান তিনি। তবে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে আদালতে জানিয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ।
বিচারক মৌখিক ভাবে তাঁকে জানিয়েছেন, ইডির মামলায় চার্জ গঠনের দিন যে কোনও শর্তে তাঁকে আদালতে আসতে হবে। সম্প্রতি পার্থের জামিন মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন করতে হবে। পার্থের সেই মামলার প্রসঙ্গ তুলেই বিচারক এ কথা জানান সুজয়কৃষ্ণকে।
বিচারকের কথা শুনে প্রথমে সুজয়কৃষ্ণ জানান, তিনি আদালতে উপস্থিত থাকবেন চার্জ গঠনের দিন। নিজেই জানান, অনির্দিষ্ট কালের জন্য শুয়ে থাকতে পারবেন না। পিঠে ব্যথা হয়ে যাচ্ছে শুয়ে থেকে। পরে আবার বিচারকের কাছে জানতে চান, ভার্চুয়াল হাজিরা হলে হবে কি না। তবে বিচারক জানিয়েছেন, চার্জ গঠনের সময়ে এক দিন সশরীরেই হাজির হতে হবে আদালতে। পরে মনে করে ভার্চুয়াল হাজিরার বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে।
চার্জ গঠনের সময়ে সুজয়কৃষ্ণ যাতে এক দিনের জন্য আদালতে আসতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সুজয়কৃষ্ণের ঠিকঠাক চিকিৎসা করার বিষয়েও জেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেন তিনি। জেল হাসপাতালের চিকিৎসকও জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে আগের তুলনায় কিছুটা ভাল আছেন। সুস্থও হয়ে উঠছেন। তবে হাসপাতালেই রয়েছেন এখনও। চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখছেন বলেও বিচারককে জানানো হয়।