—প্রতীকী ছবি।
সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ‘যোগ্য’ হলে তাঁদের পুলিশে নিয়োগের প্রথা আছে। নিয়োগে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধাও পান তাঁরা। প্রশাসনের খবর, বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ বার সেই সংরক্ষণ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এ ছাড়া, নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধিরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আপাতত তা রাজ্যের শীর্ষ মহলের কাছে পৌঁছেছে। এ ব্যাপারে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই প্রস্তাব পেশ করা হতে পারে বলে খবর। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বর্তমানে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ আছে। তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৩০ থেকে ৩৫ করার কথাও বলা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে পুলিশে কনস্টেবল পদে বড় সংখ্যায় নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও কনস্টেবল পদে নিয়োগ করা হয়। তাই রাজ্য পুলিশের কর্তাদের একাংশের আশা, আগামী নিয়োগের আগে তাঁদের পাঠানো এই প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় পাশ হতে পারে। পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্যে বর্তমানে প্রায় দেড় লক্ষ সিভিক ভলান্টিয়ার আছেন। বয়সসীমা এবং সংরক্ষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে তাঁদের অনেকেই পুলিশের পাকা চাকরি পেতে পারেন।
বস্তুত, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে নানা সময়ে নানা বিতর্ক উঠেছে। কখনও সাধারণ মানুষকে হেনস্থা, কখনও তোলাবাজি করা কখনও বা একেবারে সরাসরি শাসক দলের ‘ক্যাডার’ হিসাবে কাজ করার অভিযোগ। পুলিশকর্তাদের একাংশ মেনে নিচ্ছেন যে, সব সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে অভিযোগ না থাকলেও অধিকাংশেরই রাজনৈতিক সংশ্রব নিয়ে প্রশ্ন আছে। তার ফলে পুলিশে সিভিক ভলান্টিয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে— সে কথাও ঠারেঠোরে মানছেন তাঁরা। তবে তাঁদের পাল্টা যুক্তি, স্থায়ী পুলিশকর্মীর অভাবে রাজ্য পুলিশের বহু থানা কার্যত সিভিক ভলান্টিয়ার নির্ভর। ফলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের অনেকেই পুলিশের কাজের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। পাকা চাকরি এবং প্রশিক্ষণ পেলে এঁদের অনেকেই সদ্য চাকরি-পাওয়া কর্মীদের থেকে বেশি দক্ষ হবেন।
রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত বলেন, ‘‘পুলিশে কাজ করতে যে শারীরিক-সক্ষমতা দরকার, তা অনেক সিভিক ভলান্টিয়ারের আছে। তবে তাঁরা যদি রাজনৈতিক রঙ ভুলে বাহিনীতে কাজ যোগ দেন, তা হলেই আদতে প্রশাসনের লাভ হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাদেরও দায়িত্ব থাকবে।’’