গ্রামবাসীদের ভয় ভাঙাতে উদ্যোগী হল স্থানীয় প্রশাসন। — প্রতীকী চিত্র।
‘ভূতের ভয়ে’ কাঁপছে আস্ত গ্রাম। এমনকি ভূত তাড়াতে এক গ্রামবাসী ওঝাও ডেকে নিয়ে এসেছেন। তবুও আতঙ্ক কাটেনি। এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের ভয় ভাঙাতে উদ্যোগী হল স্থানীয় প্রশাসন। এলাকায় গেলেন বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যেরাও।
ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের বৈদ্যপুর রথতলা গ্রামের। গ্রামের বাসিন্দাদের ভূতের ভয় এতটাই পেয়ে বসেছে যে, সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না কেউ। জানলা-দরজা বন্ধ করে সকলেই বাড়ির ভিতর বসে থাকছেন।
বৈদ্যপুর রথতলা এলাকাটি কালনা ২ নম্বর ব্লকের বৈদ্যপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। এলাকাবাসীর কথা অনুযায়ী বার্ধক্য, দুর্ঘটনা এবং রোগজনিত কারণে গত ডিসেম্বর মাসে গ্রামে পর পর চার জনের মৃত্যু হয়। একের পর এক এই মৃত্যুর ঘটনার পরেই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। তার পর থেকেই নাকি অনেকে অস্বাভাবিক সব কান্ডকারখানার সাক্ষী হচ্ছেন।
এলাকার যুবক শৌভিক ক্ষেত্রপাল বলেন, ‘‘শুধুমাত্র এলাকার মহিলা, শিশু এবং বয়স্করাই ভূতের ভয় পাচ্ছেন, এমনটা নয়। কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়েরাও ভূতের ভয়ে তটস্থ।’’ তিনি নিজেও সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না বলে জানান শৌভিক।
ভূতের ভয় এতটাই তাঁদের পেয়ে বসেছে যে সন্ধ্যা নামলেই তাঁরা দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে গৃহবন্দি হয়ে থাকছেন। এমনটা জেনে নড়ে চড়ে বসেছে বিজ্ঞান মঞ্চ ও মহকুমা প্রশাসন। ভূতের আতঙ্ক কাটাতে অন্ধকার এলাকায় রাতে পুলিশি নজরদারি এবং আলো লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ভূত-আতঙ্ক কাটাতে রবিবার বৈদ্যপুর রথতলা এলাকায় যান পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কয়েক জন সদস্য এবং প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। ‘ভূত’ বলে যে কিছু নেই, এলাকায় ঘুরে ঘুরে সে কথা মানুষকে বোঝান তাঁরা। কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হয়। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বৈদ্যপুর রথতলা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ভূতের আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় আমরা এলাকাটি সরেজমিনে ঘুরে দেখি। অহেতুক আতঙ্কিত না-হওয়ার জন্য এলাকার মানুষজনকে বোঝানো হয়েছে। বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধি এবং পুলিশ-প্রশাসনও এলাকাবাসীকে সচেতনতার পাঠ দিয়েছেন। এলাকায় পর্যাপ্ত আলো না-থাকায় বহু জায়গা অন্ধকারাচ্ছন্ন। প্রশাসনের তরফে দ্রুত সব জায়গায় আলোর বন্দোবস্ত করা হবে।’’