West Bengal SSC Scam

কারচুপি করা গ্রুপ সি-র উত্তরপত্র এসএসসিকে প্রকাশ করতে নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

এসএসসির গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগের পরীক্ষার ৩৪৭৮টি উত্তরপত্র উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার করেছিল সিবিআই। অভিযোগ ছিল, ওই উত্তরপত্রের নম্বর বদল করা হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৪:২৪
শুক্রবার এসএসসির বক্তব্য শোনার পর, বিচারপতি এ ব্যাপারে তাঁর নিজের পর্যবেক্ষণ জানান।

শুক্রবার এসএসসির বক্তব্য শোনার পর, বিচারপতি এ ব্যাপারে তাঁর নিজের পর্যবেক্ষণ জানান। ফাইল চিত্র।

চাপা পড়া সত্যি কথা ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আনছে এসএসসি। শুক্রবার তেমনই এক সত্যোদ্ঘাটনে বিস্মিত হলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি জানিয়েছে, গ্রুপ সি নিয়োগে পরীক্ষার্থী প্রাপ্ত নম্বর আসল ওএমআর শিটে একরকম এবং কমিশনের কাছে আরএকরকম রয়েছে। এসএসসি এ-ও জানিয়েছে এর নেপথ্যে কমিশনেরই কিছু আধিকারিকের ভূমিকা রয়েছে। শুনে বিস্মিত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অবিলম্বে ওই উত্তরপত্র প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন তথা এসএসসিকে। একই সঙ্গে তাঁর পর্যবেক্ষণ, এই দুর্নীতির গভীরে যেতে এসএসসির প্রাক্তন সভাপতি সুবীরেশ ভট্টাচার্য এবং অন্যান্যদের বারবার জেরা করা দরকার।

স্কুলের গ্রুপ-সি কর্মী নিয়োগের মামলায় আড়ালে থাকা ৩৪৭৮টি উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই উত্তরপত্রগুলির নম্বরে কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল আগেই। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে ওই উত্তরপত্র উদ্ধার করেছিল নিয়োগ মামলার তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। শুক্রবার এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, আড়ালে থাকা এবং নম্বর কারচুপি করা উত্তরপত্রগুলিকে অবিলম্বে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-কে নিজদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য এসএসসিকে সময়ও বেঁধে দিয়েছেন বিচারপতি। শুক্রবার এসএসসিকে এক সপ্তাহ সময় দিয়ে তিনি বলেন, ৯ মার্চের মধ্যেই ওই গুম হওয়া গ্রুপ-সির উত্তরপত্র ওয়েবসাইটে আপলোড করা সম্পূর্ণ করতে হবে।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে শুনানি চলছিল স্কুলের গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগের মামলার। সেখানেই এসএসসির আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিস্মিত হন বিচারপতি। এসএসসি আদালতে হলফনামা দিয়ে জানায়, আড়ালে থাকা উত্তরপত্র এবং কমিশনের কাছে থাকা নম্বরের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। গ্রুপ সি নিয়োগের পরীক্ষার খাতা দেখার দায়িত্বে ছিল গাজিয়াবাদের সংস্থা নাইসা। এসএসসি জানিয়েছে, নাইসা-র সার্ভারে যেখানে গ্রুপ সি পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ৪০ দেখানো হয়েছে। সেখানে কারও কারও ক্ষেত্রে কমিশনের ওয়েবসাইটে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০-১২ নম্বরের আশপাশে। কী করে হল এই নম্বর বদল? কারা এই কাজে যুক্ত থাকতে পারেন তা জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। জবাবে কমিশনের আইনজীবী তাঁর অনুমানের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হয়তো পূর্বতন আধিকারিকেরাই অযোগ্যদের নিয়োগ করতে এমনটা করে থাকতে পারেন। এসএসসি-র এই সত্যোদ্ঘাটনেই চমকে গিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

শুক্রবার এসএসসির বক্তব্য শোনার পর, তিনি এ বিষয়ে তাঁর নিজের পর্যবেক্ষণ জানান। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই দুর্নীতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি বলতে পারবেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। তাঁর আমলেই এমনটা হয়েছে। সিবিআইয়ের উচিত সুবীরেশ-সহ বাকিদের বারে বারে জিজ্ঞাসাবাদ করা।’’ কমিশন জানায়, সিবিআই যে ৩৪৭৮টি ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে, তার মধ্যে ৩০০টি বিকৃত করা হয়নি। এ কথা শোনার পরও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আগামী ৯ মার্চের মধ্যে ৩৪৭৮টি ওএমআর শিট স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-কে নিজেদের সাইটে প্রকাশ করতেই হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement