Calcutta High Court

দত্ত, ভৌমিকরা কবে থেকে তফসিলি হল? এসএসসির কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট

কমিশনের যুক্তি, সংশ্লিষ্ট তালিকায় অনেক ‘প্যারা টিচার’ (পার্শ্বশিক্ষক) রয়েছেন। তাঁদের একটা সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যদিও এই যুক্তি মানতে চাননি বিচারপতি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৭:০৭
এসএসসির কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট।

এসএসসির কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। —প্রতীকী চিত্র।

উচ্চ প্রাথমিকে ৭৫০ শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসএসসি-র কাছে এ নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যও করেছেন বিচারপতি। কী ভাবে জাতিগত সংরক্ষণের তালিকায় দত্ত, ভৌমিক ইত্যাদি পদবির চাকরিপ্রার্থীদের অন্তর্ভুক্তি হল এ নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) প্রশ্ন করেন তিনি।

২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। পরে ২০১৭ সালের জুন মাসে শুধু মাত্র কর্মশিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ইন্টারভিউ (পার্সোনালিটি টেস্ট) হয়েছিল ২০১৮ সালের মার্চে। এর পর চলতি বছরের অক্টোবরে শারীরিক শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিষয়ে অতিরিক্ত পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এসএসসি। তার পরেই একটি মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। এক মামলাকারী তথা চাকরিপ্রার্থী সোমা রায়ের অভিযোগ, গত ৩ নভেম্বর কর্মশিক্ষা বিষয়ে যে ‘ওয়েটিং লিস্ট’ প্রকাশ করে এসএসসি, তাতে তাঁর নাম নেই। তিনি তফসিলি জাতিভুক্ত। পরীক্ষা এবং পার্সোনালিটি টেস্ট মিলিয়ে ৭২ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু ‘অ্যাকাডেমিক স্কোরে’ ২২-এর পরিবর্তে তাঁকে ১৮ নম্বর দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন কমিশনের আইনজীবী একটি যুক্তি দিয়েছেন। তাঁর দাবি, মামলাকারীর আগে যে নামগুলো সামনে আছে, তাঁদের ‘বিশেষ যোগ্যতা’ রয়েছে। তা কী এই যোগ্যতা?

Advertisement

কমিশনের যুক্তি, সংশ্লিষ্ট তালিকায় অনেক ‘প্যারা টিচার’ (পার্শ্বশিক্ষক) রয়েছেন। তাঁদের একটা সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যদিও এই যুক্তি মানতে চাননি বিচারপতি। আদালত জানায়, তথ্য বলছে তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের নামও ঢোকানো হয়েছে। সুত্রের খবর, ওই তালিকায় দত্ত, ভৌমিক ইত্যাদি পদবির চাকরিপ্রার্থী আছেন। এ নিয়ে বিচারপতি বসুর প্রশ্ন, ‘‘কী বিশেষ যোগ্যতা রয়েছে ওই প্রার্থীদের? আপনি কি বলতে চাইছেন ভৌমিক পদবি তফসিলি জাতিভুক্ত?’’ এখানেই থামেননি তিনি। বলেন, ‘‘এ সব করে আপনারা (পড়ুন এসএসসি) হয়রানি করছেন চাকরিপ্রার্থীদের।’’

উল্লেখ্য, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা চলছে হাই কোর্টে। তাতে ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট মামলা যেমন রয়েছে, তেমনি আছে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কিছু ব্যক্তিগত মামলা। মঙ্গলবার সোমা রায় নামে চাকরিপ্রার্থীর মামলার শুনানির সময় আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘কমিশন নিজেও জানে যে তারা স্বচ্ছ নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement