RG Kar Protest

‘দাবি না মানলে মঙ্গলবার সর্বাত্মক চিকিৎসক ধর্মঘট’! সিনিয়র-জুনিয়র বৈঠকের পর যৌথ হুঁশিয়ারি

সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠকে বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই বৈঠক শেষে জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার রাজ্য সরকারকে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার সময় বেঁধে দিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ২১:২৩

সোমবারের মধ্যে সব দাবি মানা না হলে আবারও ধর্মঘটে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন চিকিৎসকেরা। শুক্রবার সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জুনিয়রেরা। সেই বৈঠক শেষে জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার রাজ্য সরকারকে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী যদি আমাদের দাবি না মানেন, তবে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সর্বাত্মক ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব।’’ সেই ধর্মঘটে সিনিয়র ডাক্তারেরাও যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন দেবাশিস। শুক্রবার তিনি যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পরবর্তী কর্মসূচি এবং ‘ধর্মঘটে’র কথা বলেন, তখন তাঁর সঙ্গে অন্য জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি সিনিয়রাও ছিলেন।

Advertisement

১০ দফা দাবি নিয়ে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আরজি কর-কাণ্ডের বিচার, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিবর্তনের দাবিতে গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে তাঁদের আন্দোলন চলছে। কিন্তু সরকারের তরফে সাড়া মিলছে না। ইতিমধ্যে ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন পাঁচ জন। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনের পরবর্তী অভিমুখ কী হওয়া উচিত, তা স্থির করতে শুক্রবার সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। বৈঠক শেষে দেবাশিস বলেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত আমরা একটা সময়সীমা দিচ্ছি। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের সব ক’টি দাবি মানার জন্য আলোচনায় বসতে হবে এবং সব ক’টি দাবি মেনে নিতে হবে। যদি তা না হয় তবে আগামী মঙ্গলবার সিনিয়র এবং জুনিয়র ডাক্তারদের সমস্ত সংগঠন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে সর্বাত্মক ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব।’’ দেবাশিস এ-ও জানান, সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

অতীতে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে স্বাস্থ্য পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে নানা অভিযোগ উঠেছিল। শুধু কলকাতায় নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিতে প্রভাব পড়েছিল ডাক্তারদের কর্মবিরতি। শুক্রবার সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে হুঁশিয়ারির সুরে দেবাশিস বলেন, ‘‘ধর্মঘট চলাকালীন যদি এক জন রোগীরও কোনও সমস্যা হয়, তবে তার দায় রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে। আমাদের আর কোনও উপায় ছিল না বলেই অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছিলাম আমরা। কর্মবিরতি তুলে নিজেদের জীবন বাজি রেখেছিলাম। ভেবেছিলাম মানবিক মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কথা ভাববেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সদুত্তর পাইনি সরকারের থেকে। আমাদের সহযোদ্ধাদের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে।’’

উল্লেখ্য, আন্দোলনের অভিমুখ ঠিক করতে বৃহস্পতিবারও সিনিয়রদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু যান্ত্রিক কিছু ত্রুটির কারণে বৈঠক সম্পন্ন হয়নি। তা থেকে কোনও সিদ্ধান্তেও আসা যায়নি। সেই কারণেই শুক্রবার আবার বৈঠক ডাকা হয়েছিল। আইএমএ থেকে শুরু করে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে।

‘ধর্মঘটে’ যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে শুক্রবারের বৈঠকে। শনিবার ‘ন্যায়বিচার যাত্রার’ ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেখানে সিনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন থেকে নাগরিক সংগঠন— সকলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসকের বাড়়ির এলাকা থেকে শুরু হবে এই কর্মসূচি। তার পর মিছিল যাবে ধর্মতলার অনশনমঞ্চ পর্যন্ত। এ ছাড়াও রবিবার ধর্মতলার অনশনমঞ্চে ‘মহাসমাবেশে’র ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানেও সকলকে উপস্থিত থাকার আর্জি জানিয়েছেন দেবাশিস। পাশাপাশি সোমবার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে।

(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী দাবি না মানলে ‘মঙ্গলবার থেকে’ সর্বাত্মক ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিনিয়র এবং জুনিয়র ডাক্তারেরা। এটি ঠিক নয়। ঘোষণা অনুযারী, মঙ্গলবার থেকে নয়, সিনিয়র-জুনিয়র ডাক্তারেরা শুধু মঙ্গলবারেই সর্বাত্মক ধর্মঘটে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গুরুতর এই ভ্রান্তি গোচরে আসার পরেই আমরা সেটি সংশোধন করেছি। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী)

আরও পড়ুন
Advertisement