Sandip Ghosh

‘আরজি করে দুর্নীতির মামলার চার্জ গঠন পিছিয়ে দেওয়া হোক’! হাই কোর্টে এ বার আর্জি সন্দীপদের

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সন্দীপদের আর্জি, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ১০ হাজার পাতার চার্জশিট পড়ে বক্তব্য পেশের জন্য এক সপ্তাহ সময় যথেষ্ট নয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৩
Sandip Ghosh and other accused of RG Kar Hospital Financial Irregularities case appeal before Calcutta High Court to defer charge framing

হাই কোর্ট নতুন আবেদন সন্দীপদের। —ফাইল ছবি।

আরজি কর মেডিকেল কলেজে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় চার্জগঠন (চার্জফ্রেম) প্রক্রিয়ার সময়সীমা বৃদ্ধি করতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ সন্দীপ ঘোষ। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের আর্জি, হাই কোর্ট সাত দিনের মধ্যে যে চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনা করা হোক। শুক্রবার ওই বিষয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সন্দীপ এবং আর এক অভিযুক্ত আশিস পাণ্ডের আইনজীবী।

Advertisement

সন্দীপেরা আবেদনে জানিয়েছেন, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ১০ হাজার পাতার চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। সাত দিনের মধ্যে চার্জ গঠন হলে চার্জশিটের পুরোটা পড়ার সুযোগ থাকবে না। কম সময়ের মধ্যে অভিযুক্তেরা নিজেদের বক্তব্য আদালতের সামনে সঠিক ভাবে পেশ করতে পারবে না। তাই বিচারপ্রক্রিয়ার গতি কমানো হোক। সন্দীপের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে নোটিস পাঠিয়ে আবেদন করুন। নিম্ন আদালতে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করুন।’’

সেই সঙ্গে শুক্রবারের শুনানিতে বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, ‘‘ওই দুর্নীতি মামলার বিচারে প্রক্রিয়াগত দেরি হচ্ছিল। গত বছর নভেম্বরে চার্জশিট দেওয়ার পরেও ট্রায়াল ঢিমেতালে চলছিল। তার জন্য কে দায়ী, সেই বিতর্কে যাচ্ছি না। সেই কারণেই এই আদালত সাত দিনের মধ্যে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল।’’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি ঘোষের এজলাসে আরজি কর দুর্নীতি মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই জানিয়েছিল, শীঘ্রই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। তাদের বক্তব্য শুনে বিচারপতি ঘোষ সাত দিনের মধ্যে চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর পরেই পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন সন্দীপেরা।

প্রসঙ্গত, আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি প্রথম হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছিলেন। সেই মামলারই গত মঙ্গলবার শুনানি হয়েছিল বিচারপতি ঘোষের এজলাসে। মঙ্গলবার হাই কোর্টে একটি মুখবন্ধ খামও জমা দিয়েছে সিবিআই। আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্ত চালাচ্ছে অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও। তারা জানিয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে। তদন্ত দ্রুত শেষ করার জন্য ইডিকে বলেছেন বিচারপতি ঘোষ।

সিবিআইয়ের তরফে হাই কোর্টকে জানানো হয়, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য রাজ্যের সম্মতিও নেওয়া হয়েছে। দ্রুত বিচার শুরু হবে বলে হাই কোর্টে জানায় সিবিআই। গত বছরের ২৩ অগস্ট আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত ২৯ নভেম্বর আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ইডির আইনজীবী মঙ্গলবার হাই কোর্টে জানান, এখনও পর্যন্ত ২২ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে জেরাও করা হয়েছে।

আরজি কর হাসপাতালে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছিল আরজি করে। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিই ‘ঘনিষ্ঠ’দের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন। সিবিআই চার্জশিটে নাম রয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের। এ ছাড়াও এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরও চার জনের নাম চার্জশিটে রয়েছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন সন্দীপ। টানা কয়েক দিন সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে এই মামলার সূত্র ধরে বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি এবং সুমন হাজরাকেও গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় শেষ গ্রেফতার আশিস পাণ্ডে। প্রত্যেকেই বর্তমানে জেলবন্দি।

Advertisement
আরও পড়ুন