R G Kar Incident

বিচারাধীন বিষয় নিয়ে যদি আলোচনা হতে পারে, তা হলে লাইভে আপত্তি কেন? প্রশ্ন প্রাক্তন বিচারপতি অশোকের

বৃহস্পতিবার মমতা বলেছিলেন, ‘‘সরাসরি সম্প্রচারে আমাদের আপত্তি ছিল না। কিন্তু এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে। আমরা এমন কিছু করতে চাইনি, যাতে অচলাবস্থা চলতে পারে।’’

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:০০
Retired Justice Ashok Ganguly\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s reaction on live streaming of junior doctors\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\' meeting with

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

শুধুমাত্র একটি কারণে বৃহস্পতিবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারের আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। তা হল বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং না হওয়া। তার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের লাইভ স্ট্রিমিংয়ে কোনও আপত্তি নেই। আরজি কর মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বলে লাইভ স্ট্রিমিং করা যাচ্ছে না। কিন্তু মমতার সেই যুক্তির কোনও আইনি সারবত্তা নেই বলে দাবি করলেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে অশোক বলেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয়ের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে রাজি হননি, তা একেবারেই ওঁর মস্তিষ্কপ্রসূত যুক্তি। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে যদি আলোচনা হতে পারে, তা যদি রেকর্ড করা হতে পারে, তা হলে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে আপত্তি থাকবে কেন? আইনে এ রকম কিছু নেই৷’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার মমতা বলেছিলেন, ‘‘সরাসরি সম্প্রচারে আমাদের আপত্তি ছিল না। কিন্তু এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে। আমরা এমন কিছু করতে চাইনি, যাতে অচলাবস্থা চলতে পারে। চিঠিতে আমরা লিখেছিলাম, সরাসরি সম্প্রচার করতে পারব না। ওঁরা যে কোনও ইস্যু তুলতে পারতেন। সেটা ওঁরা পরে সংবাদমাধ্যমকে জানাতে পারতেন। আমরা যুগ্ম ভাবেও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারতাম।’’

অশোকের ব্যাখ্যা, সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেছিল সরকার এবং চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনাসাপেক্ষে জট কাটুক। পরোক্ষে সুপ্রিম কোর্টই আলোচনার প্রসঙ্গের অবতারণা করেছিল। তাঁর কথায়, ‘‘সেই আলোচনা কী ভাবে হবে বা হবে না, সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট কিছু বলেছে বলে আমার অন্তত জানা নেই৷’’

আইনজীবী তথা সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, লাইভ স্ট্রিমিংয়ে কোনও আইনি বাধা ছিল না। বিকাশের কথায়, ‘‘চিত্রনাট্য অনুযায়ী বৈঠক হবে না বুঝেই মুখ্যমন্ত্রী লাইভ স্ট্রিমিংয়ে রাজি হননি। অন্য সময় তো প্রশাসনিক বৈঠক লাইভ হয়। এখন কেন করলেন না?’’ মুখ্যমন্ত্রী বিচারাধীন বিষয়ের উল্লেখ করে যে ভাবে লাইভ সম্প্রচারে অপারগতার কথা জানিয়েছিলেন, তাকেও ‘ছেঁদো যুক্তি’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিকাশ।

এর পাল্টা মতও রয়েছে। আইনজীবী তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কোন আলোচনায় কোথায় লাইভ স্ট্রিমিং হয়? কোন আইনে রয়েছে যে, লাইভ স্ট্রিমিং বাধ্যতামূলক? জেদ করে একটার পর একটা শর্ত চাপানো হচ্ছে। এটা এক ধরনের দর কষাকষির রাজনীতি (বার্গেনিং পলিটিক্স) চলছে।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দরকার কী? বৈঠকটা তা হলে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে হোক। এটা কি কোনও যুক্তি হতে পারে?’’

তৃণমূলের অনেকেই ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, বিষয়টি যতটা না আইনি তার চেয়েও বেশি প্রশাসনিক। কোনও সরকারই এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে আলোচনার লাইভ সম্প্রচার করবে না। কারণ, বৈঠকে নানা রকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তা থেকে বাইরে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। যা সামগ্রিক ভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্যও শুভ সঙ্কেত দিত না। তা ছাড়া সরকারের তরফ থেকে রেকর্ড করার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। তাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা রাজি হননি।

আরও পড়ুন
Advertisement