কুন্তল, শান্তনু, তাপস— নিয়োগ দুর্নীতিতে তিন জনের যোগ খুঁজে পেয়েছে ইডি। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জুড়ে গেল ৩টি নাম। ৩ জনেই এখন জেলবন্দি। শনিবার হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়, শান্তনুর কথাতেই এই মামলায় আর এক অভিযুক্ত কুন্তলকে টাকা দিয়েছিলেন তাপস। তাপসও নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে জেলবন্দি। ইডির তরফে আদালতে তাপসের বয়ান তুলে ধরে জানানো হয়, ২০১৬ সালে একটি আবাসনে শান্তনুর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাপসের। শান্তনুর উপর ভরসা রেখেই কুন্তলকে ১৯ কোটি টাকা দিয়েছিলেন তাপস। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির নেপথ্যে বেশ কিছু বড় মাথা থাকলেও চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সেই সব প্রভাবশালীদের যোগসূত্র ছিলেন এই শান্তনু, কুন্তলরা।
ইডি এ-ও দাবি করে যে, তাদের তদন্তে জানা গিয়েছে, চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কুন্তল তা তুলে দিতেন শান্তনুর হাতে। ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, শান্তনুর বাড়িতে থাকা তালিকায় এমন ৭ জনের নাম রয়েছে, যাঁরা পরে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। এই বিষয়টি শনিবার আদালতে উত্থাপন করে ইডি। এই সব বিষয়ে শান্তনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাঁকে ১৪ দিন হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন বলে জানায় ইডি। ইডির দাবি খারিজ করে ব্যাঙ্কশাল আদালতে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিনের জন্য আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী। ইডির তরফে আদালতে জানানো হয়, শান্তনু বড় নেতা কি না, তারা সে প্রসঙ্গে যেতে চায় না। তবে তদন্তকারী সংস্থাটির দাবি, তাঁর বাড়ি থেকে চাকরিপ্রার্থীদের যে নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে, সেই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
শনিবার আদালতে ইডি এ-ও দাবি করে যে, শান্তনুর নামে থাকা ধাবা এবং একটি সংস্থায় তাঁর স্ত্রীর নামও পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে টাকা তছরুপের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন ইডি আধিকারিকরা। অন্য দিকে শান্তনুর আইনজীবী জামিনের আর্জি জানিয়ে বলেন, “উনি পালিয়ে যাবেন না, তদন্তে সহযোগিতা করবেন। তাই তাঁকে (শান্তনু) জামিন দেওয়া হোক।” ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে শান্তনু যে ৬ বার তদন্তকারী সংস্থার অফিসে হাজিরা দিয়েছেন, সে কথাও জানানো হয়। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক শান্তনুকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত ২ দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।