শিয়ালদহ স্টেশনে ইন্টিগ্রেটেড প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম (আইপিআইএস) চালু করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। —ফাইল চিত্র।
স্টেশনে ট্রেন ঢোকা এবং ছাড়ার খবর যাত্রীদের নির্ভুল ভাবে জানাতে শিয়ালদহ স্টেশনে ইন্টিগ্রেটেড প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম (আইপিআইএস) চালু করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। কালো বোর্ডের উপরে সাদা উজ্জ্বল আলোয় ট্রেনের নাম, নম্বর, প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা এবং ছাড়ার সময় স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠছে। যা চোখে পড়ছে অনেক দূর থেকে। প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও যাত্রীদের যাতায়াতের পথের পাশে (কনকোর্স) ওই বোর্ড বসানো হয়েছে। পাশাপাশি, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ট্রেনের ঘোষণাও চলছে।
শিয়ালদহ ডিভিশনের সিগন্যালিং এবং টেলি-কমিউনিকেশন বিভাগের উদ্যোগে এই সুসংহত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। অতীতে রেলের কর্মীরা ট্রেন আসা এবং ছাড়ার সময় ঘোষণা করতেন। ম্যানুয়াল ওই পদ্ধতিতে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি ছোটখাটো ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকত। সেই সঙ্গে কর্মীর দক্ষতা-ভেদে ঘোষণার তারতম্য হত। অনেক সময়ে যাত্রীরা সেই ঘোষণা ঠিক মতো বুঝতেও পারতেন না।
সিগন্যালিং এবং টেলি-কমিউনিকেশন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় তৈরি হওয়া নতুন এই ব্যবস্থাটি তুলনায় অনেক সুসংহত। কোন ট্রেন ঢুকছে, কোনটি ছেড়ে যাচ্ছে— তার খুঁটিনাটি যাবতীয় তথ্য ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সফটওয়্যার থেকে সরাসরি আইপিআইএস ব্যবস্থায় চলে আসছে। সেই অনুযায়ী ওই তথ্য নির্দিষ্ট বোর্ডে ফুটে উঠছে এবং একই সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ঘোষণা হচ্ছে। নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও যাতায়াতের পথে ওই বোর্ড বসানোর ফলে স্টেশনে ঢোকা মাত্র এক জন যাত্রী বুঝতে পারছেন, তাঁর ট্রেন কত নম্বর প্ল্যাটফর্মে রয়েছে এবং সেটি কখন ছাড়বে। এতে অযথা প্ল্যাটফর্ম খোঁজার হাত থেকে তিনি যেমন রেহাই পাচ্ছেন, তেমনই অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে হুমড়ি খেয়ে ভিড় করার এবং স্টেশনের বিভিন্ন দিকে ছুটে ট্রেন খোঁজার প্রবণতা অনেকটা কমানো সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট কামরার হদিসও পৃথক বোর্ড থেকে পেয়ে যাচ্ছেন ওই যাত্রী। এই প্রসঙ্গে এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘স্টেশনে ঢোকা মাত্র কোনও যাত্রী যদি তাঁর ট্রেন এবং নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মের পথনির্দেশ পান, তাঁর সফরের উৎকণ্ঠা অনেকটা কমে যায়। এতে প্ল্যাটফর্মের ভিড় নিয়ন্ত্রণেও সুবিধা হয়।’’
রেল সূত্রের খবর, এই ব্যবস্থাকে পর্যায়ক্রমে আরও উন্নত করে তোলার পাশাপাশি শিয়ালদহ ডিভিশনের অন্য সব স্টেশনেও ধাপে ধাপে চালু করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই শহরতলির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং জনবহুল স্টেশনে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।