Recruitment Scam

এ তো বিলাসবহুল হোটেল! শান্তনুদের ফ্ল্যাটের তালা খুলে অবাক রবি খানিক ঘুমিয়েও নিলেন

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ততে শনিবার চুঁচুড়ার জগুদাসপাড়ায় প্রোমোটার অয়ন শীলের তৈরি একটি আবাসনে হানা দেয় ইডি। জানা গিয়েছে, সেখানে অয়নের ফ্ল্যাট রয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ০৮:১৬
ayan sil.

প্রোমোটার অয়ন শীল। ফাইল চিত্র।

নরম তুলতুলে গদির খাটে শনিবার দুপুরে ঘুমটা দারুণ হয়েছে রবি পালের!

ঘোরটা কিছুতেই কাটছে না। বারো মাস হুগলির চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে রাস্তার ধারে বসে চাবি সারান দিন আনা দিন খাওয়া ওই যুবক। একটু-আধটু গানবাজনার সুবাদে কলকাতার কয়েকটি নামী হোটেল দেখা হয়েছে তাঁর। তবে কোনও ফ্ল্যাট যে পাঁচতারা হোটেলের মতো সাজানো হতে পারে, তিনি কোনও দিন কল্পনাও করতে পারেননি।

Advertisement

শনিবার রবি পাল নামে ওই যুবক একসঙ্গে ঝলমলে অন্দরসজ্জার বিশাল দু’টি ফ্ল্যাট তো দেখলেনই, একটিতে শুয়ে ঘুমও দিলেন!

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ততে শনিবার চুঁচুড়ার জগুদাসপাড়ায় প্রোমোটার অয়ন শীলের তৈরি একটি আবাসনে হানা দেয় ইডি। জানা গিয়েছে, সেখানে অয়নের ফ্ল্যাট রয়েছে। ইডি-র হাতে ধৃত যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই আত্মীয়ের নামেও ফ্ল্যাট আছে। আবাসনে তল্লাশির সময় চাবি খোলার প্রয়োজনে রবিকে ডেকে এনেছিলেন ইডি আধিকারিকেরা।

ঘড়ির মোড়ে আইনজীবীদের গ্রন্থাগারের কাছে রাস্তার পাশে বসে কাজ করেন রবি। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানোর গুণ রয়েছে তাঁর। মাঝেমধ্যে এ দিক-সে দিক সঙ্গীতানুষ্ঠানেও যোগ দেন। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ কাজ শুরু করেন রবি। কিছু ক্ষণ পরে একটি সাদা গাড়ি এসে তাঁর সামনে দাঁড়ায়। ধোপদুরস্ত পোশাকে এক জন নেমে এসে মোবাইল ফোনে কয়েকটি আধুনিক ‘লকের’ ছবি দেখিয়ে রবিকে জিজ্ঞাসা করেন, এগুলি তিনি খুলতে পারবেন কি না! রবি ‘হ্যাঁ’ বলতেই, গাড়িতে উঠতে বলেন। রবি উঠতে চাননি। তখনই পরিচয়পত্র দেখান ওই ইডি আধিকারিক। তা দেখে রবির মুখে তালা পড়ে। তড়িঘড়ি যন্ত্রপাতি গুটিয়ে গাড়িতে চাপেন।

তাঁকে নিয়ে ওই ইডি আধিকারিক জগুদাসপাড়ায় আবাসনে যান। প্রথমে শান্তনুর আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয় রবিকে। পরে অয়নের ফ্ল্যাটে। দু’টি ফ্ল্যাটের মোট ছ’টি আধুনিক ‘লক’ খুলে ফেলেন তিনি। ঘরের দিকে তাকিয়ে তাঁর চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।

রবির কথায়, ‘‘এমন পেল্লাই ঘর জীবনে দেখিনি। ইয়া বড় বড় শো-পিস। ঘরের ভিতরে বহুমূল্য সব জিনিসপত্র। পাঁচতারা হোটেল বললেও মনে হয় কম হবে। প্রথমে ভয়-ভয় লাগলেও অধিকারিকেরাই মনে সাহস জুগিয়েছেন। দুপুরে পেট ভরে মাছ-ভাত খাইয়েছেন। ওঁরা বলছিলেন, ঘরে নিজের মতো করে শুয়ে-বসে কাটাতে। বাইরে বেরোনো যাবে না।’’

ওই আবাসনের পাঁচ তলায় রয়েছে অয়নের ফ্যাট। তেতলায় শান্তনুর আত্মীয়ের। রবি ছিলেন শান্তনুর আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে। তাঁর কথায়, ‘‘তুলতুলে গদিতে দুপুরের ঘুমটা দারুণ হয়েছে। স্নান করলে ঘুমটা আরও ভাল হত। বাথরুমটা এতটাই আধুনিক, সাহস পাইনি।’’

ইডি-র তদন্তকারীদের তাঁর কাজ কেমন লাগল?

রবির জবাব, ‘‘ওঁরা খুব সুনাম করেছেন। ফোন নম্বর নিয়েছেন। বলেছেন আবার ডাকতে পারেন। এ বার ডাকলে স্নানটা মিস করা যাবে না।’’

আরও পড়ুন
Advertisement