Tigress Zeenat

ডেরা বদল জ়িনতের

ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলপথে এ রাজ্যে প্রবেশ জ়িনতের। রবিবার ঢোকে বান্দোয়ানে।

Advertisement
প্রশান্ত পাল  , রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:২৪
বোরোর পাইসাগোড়ায় জাল টাঙানোর কাজ চলছে।

বোরোর পাইসাগোড়ায় জাল টাঙানোর কাজ চলছে। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।

টোপের মোষকে গাছে বেঁধে খাঁচার ভিতরে বাঘিনি জ়িনতের অপেক্ষা করছিলেন ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ায় পারদর্শীরা। তবে নাগালের মধ্যে এলেও, গুলি করার আগে উধাও হয় জ়িনত।

Advertisement

পুরুলিয়ার জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়ার পাঁচ দিন পরে, শুক্রবার ঠিকানা বদলায় বাঘিনি। এ দিন ভোরে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের জঙ্গল থেকে উত্তরে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে, বোরো থানার পাইসাগোড়ায় পৌঁছয় সে। ওই এলাকায় জ়িনতকে ধরার সম্ভাবনা বাড়লেও, লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তায় রেখেছে বন দফতরকে।

বাঘিনি আসার খবর ছড়াতে এ দিন ভিড় জমে এলাকায়। অনেকের হাতে ছিল লাঠি। বনকর্মী ও পুলিশ তাঁদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেয়। বন্ধ ছিল এলাকার স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র।

ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলপথে এ রাজ্যে প্রবেশ জ়িনতের। রবিবার ঢোকে বান্দোয়ানে। টোপ দিয়ে ফাঁদ পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষার পরে, বৃহস্পতিবার জঙ্গলে ঢুকে অভিযান চালিয়েছিলেন বনকর্মীরা। তার পরে এলাকা ছাড়ে বাঘিনি। বনকর্তাদের অনুমান, অভিযানের পরে ওই জঙ্গল আর নিরাপদ মনে হয়নি জ়িনতের।

‘জিপিএস ট্র্যাকার’ অনুযায়ী, এ দিন সকালে পাইসাগোড়ায় পৌঁছন বনকর্মীরা। গ্রামের একটি আলুখেতে বাঘের পায়ের ছাপ নজরে আসে তাঁদের। ড্রোন উড়িয়ে শুরু হয় বাঘিনির নির্দিষ্ট অবস্থান জানার চেষ্টা। স্থানীয় মানবাজার ২ রেঞ্জের ঝাটিপাহাড়ির জঙ্গলে খোঁজ মেলে তার। এলাকার দু’দিক জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা শুরু হয়। ততক্ষণে এলাকায় পৌঁছেছে সুন্দরবন ও সিমলিপালের ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ায় পারদর্শীদের দল।

ওই জঙ্গলের চারপাশে রয়েছে ডাঙরডি, বুরুডি, ধরমপুর, শুশুনিয়ার মতো একাধিক গ্রাম। গ্রামগুলির সীমানা বরাবর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জাল দিয়ে ঘেরা হয়। রাইকার জঙ্গল থেকে আনা তিনটি খাঁচাও বসানো হয়। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ জঙ্গলে ঢোকে বনকর্মীদের প্রায় ৪০ জনের দল। রাত ঘনালেও থামেনি অভিযান।

বনকর্তাদের একাংশ জানান, টোপ রেখে ‘গানার’ অপেক্ষায় রয়েছেন। এক বার খাঁচার খুব কাছে জ়িনত গেলেও ভেতরে ঢোকেনি। অভিযানে শামিল মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র) বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “জঙ্গলটি তিন দিক দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। বাঘিনিকে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।”

Advertisement
আরও পড়ুন