সাঁইথিয়ায় শহর গ্রন্থাগারে মাঠপলশা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।
ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ার বইয়ের বাইরে বই পড়ছে না। মোবাইলে দীর্ঘক্ষণ মেতে থাকছে তারা। দীর্ঘদিন ধরে এ সব লক্ষ করছিলেন সাঁইথিয়া মাঠপলশা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকারা। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের বইমুখী করতে তাদের জন্য গ্রন্থাগারের কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল স্কুলের পক্ষ থেকেই। সোমবার সাঁইথিয়া শহর গ্রন্থাগারে স্কুলের ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর সেই কার্ড তৈরি হল।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকারা জানান, পড়ার বইয়ের বাইরে পড়ার অভ্যাস ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কমে যাচ্ছিল। মোবাইলে ক্রমেই ‘আসক্ত’ হয়ে পড়ছিল তাঁরা। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের বইমুখী করতে তাদের জন্য বইয়ের ব্যবস্থা করা দরকার। গ্রন্থাগার ছাড়া সে বই পাওয়া সম্ভব নয়। তাই তাদের জন্য গ্রন্থাগারের কার্ড করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল। সে মতো এ দিন অষ্টম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রীকে গ্রন্থাগারের কার্ড তৈরি করতে শহরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়, গণিতের শিক্ষক পার্থসারথি সেন ও ভূগোলের শিক্ষক গোপালচন্দ্র দাস ছাত্র-ছাত্রীদের সাঁইথিয়া শহর গ্রন্থাগারে নিয়ে যান। তাঁরা জানান, স্কুলের অনেক ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষে বই কিনে পড়া সম্ভব নয়। নিজের পছন্দের মতো বই পড়তে গ্রন্থাগার জরুরি। তাই এ দিন তাদের পছন্দের বই পড়তে গ্রন্থাগারের কার্ড বানিয়ে দেওয়া হল।
দুই ছাত্রী তৃষা দাস ও দিশা সাহা জানায়, পরিবারের আর্থিক সমস্যার কারণে আমাদের পক্ষে বই কেনা সম্ভব নয়। ফলে, ইচ্ছা থাকলেও পাঠ্যবইয়ের বাইরে বই পড়া সম্ভব হয় না। এ দিন স্কুলের পক্ষ থেকে গ্রন্থাগারের কার্ড বানিয়ে দেওয়া হল। আমরা খুব খুশি। গল্পের বই, সাধারণজ্ঞানের বই এবং প্রতিযোগিতামূলক বই পড়তে পারব।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছিল। তাই ‘শিক্ষার্থী সপ্তাহ’ উপলক্ষে ‘ফিরে চলো বইয়ের টানে’ এই থিমকে সামনে রেখে ২৫ ছাত্র-ছাত্রীকে সাঁইথিয়া শহর গ্রন্থাগারে নিয়ে নাম নথিভুক্ত করালাম। আজ শুরু হল। ফেব্রুয়ারি মধ্যে ২০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর নাম নথিভুক্ত করাব। এতে ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পারবে। আজ এসে ছাত্র-ছাত্রীরা খুশি হয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে।”
সাঁইথিয়া শহর গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিক আনন্দ দলুই বলেন, “আমরা চাই ছাত্র-ছাত্রীরা সব সময়ে গ্রন্থাগারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখুক। তা হলে আমরাও ছাত্র-ছাত্রীদের চাহিদা মতো সমস্ত ধরনের বই রাখতে পারব। এখন ছাত্র-ছাত্রীরা একটু একটু করে গ্রন্থাগারমুখী হচ্ছে। আমরা চাই এ ভাবে বিদ্যালয়গুলির পক্ষ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রন্থাগারে নিয়ে আসা হোক। স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও ছাত্রীদের এনে গ্রন্থাগারে নাম নথিভুক্ত করানো হয়েছে।”