মৃত ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে আবার এক ছাত্রকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ। কলকাতার বাগুইআটি জোড়া খুনের ঘটনার পর এ বার বীরভূম। অপহরণ করে খুন করা হল ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে। মৃতের নাম সৈয়দ সালাউদ্দিন। তাঁর বাড়ি বীরভূমের খয়রাশোল থানার আহমেদপুর গ্রামে। রবিবার চৌপাহাড়ি জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছে দেহ।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সকালে বীরভূমের ইলামবাজার থানার চৌপাহাড়ি জঙ্গল থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর গলার নলি কাটা ছিল। পরে প্রকাশ্যে আসে যুবকের নাম ও পরিচয়। সৈয়দ সালাউদ্দিনের পরিবারের দাবি, তাদের ছেলেকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে এক সন্দেহভাজনকে আটকও করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, আসানসোলের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশুনা করতেন সৈয়দ সালাউদ্দিন। বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে যাবেন বলে বাড়িতে বলেছিলেন। এর পর শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁর বাবা একটি ফোন পান। তাতে বলা হয়, তাঁর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ লাগবে ৩০ লক্ষ টাকা। তার পর রবিবার সকালেই তাঁর এই দেহ উদ্ধারের ঘটনা। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শেখ সলমন নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তিনি মৃতের বন্ধু বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। এ পর্যন্ত যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে জানা গিয়েছে কিছু দিন আগে সৈয়দ সালাউদ্দিনের কাছে দু’ লক্ষ টাকা ধার চেয়েছিলেন সলমন।
বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারের কাছে দু’ঘণ্টার মধ্যে লক্ষাধিক টাকা চেয়ে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ফোন করা হয়। মল্লারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশের মোট তিনটি দল তদন্তে নামে। মৃতের ফোনের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করে দেহ উদ্ধার হয়।’’ পুলিশ অফিসারের দাবি, পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে বলে তাঁরা প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন। নগেন্দ্র যোগ করেন, ‘‘আগে থেকে চাকু কেনা হয়েছিল। তার পরেই এই খুন হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, কলকাতার বাগুইআটির দুই দশম শ্রেণির পড়ুয়াকে খুনের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। গত ২২ অগস্ট থেকে বাগুইআটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর নিখোঁজ ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, অপহরণের পরে পরেই গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয় দু’জনকে। তার পর গাড়ি থেকে দেহ ছুড়ে ফেলা হয় দু’টি পৃথক জায়গায়। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রতিবেশী সত্যেন্দ্র চৌধুরিকে হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল শামিম আলি, শাহিন আলি এবং দিব্যেন্দু দাস নামে তিন জনকে।