গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশ সুপার। নিজস্ব চিত্র
সরলতার সুযোগ নিয়ে আদিবাসীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হলে কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিলেন পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার অযোধ্যা পাহাড়ের রাঙা ময়দানে পুলিশের জনসংযোগ কর্মসূচিতে পুলিশ সুপার ওই মন্তব্য করেন।
সেখানে বক্তৃতায় পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘আদিবাসীদের উন্নয়নই মূল লক্ষ্য। তবে আদিবাসীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে এখনও কিছু লোকজন তাঁদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সব বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করবে।’’
যদিও কাদের উদ্দেশ্যে ওই বার্তা, তা স্পষ্ট করেননি পুলিশ সুপার। তবে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি অযোধ্যা পাহাড়ে আদিবাসীদের জমি অল্প দামে হাত বদল হয়ে যাচ্ছে। সেখানে গড়ে উঠছে হোটেল, রিসর্ট। এ নিয়ে আদিবাসীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। হতে পারে, সেই ক্ষোভ যাতে কেউ নিজেদের অন্য স্বার্থে কাজে লাগাতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে।
আবার কোনও কোনও সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, অযোধ্যা পাহাড়ে রাজ্য সরকার ঠুরগা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করতে চাইলেও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে তার বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন
স্থানীয়দের একাংশ। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন পরিবেশ প্রেমী সংগঠনও। সম্প্রতি পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে ওই সব সংগঠন বৈঠক করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
বছর দুয়েক আগে তৎকালীন সভাধিপতি তৃণমূলের সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, স্থানীয়েরা কোনও করতেই পারেন। প্রশাসনও তাঁদের সঙ্গে কথা বলবে। তবে পাহাড়ের উন্নয়নে বাইরের লোকজন এসে যদি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে, মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে, প্রশাসনও তা দেখবে।
সাম্প্রতিক কালে পুলিশের তরফে অযোধ্যা পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় কয়েকবার জনসংযোগ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এ দিনও নিখরচায় চক্ষু পরীক্ষা এবং চিকিৎসা শিবির, কম্বল বিতরণ কর্মসূচি ছিল। ছিল প্রশাসন, ভূমি এবং বন দফতরের স্টল।
প্রকল্পের সুবিধা পেতে সরাসরি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার বার্তা দেওয়া হয়। পথ নিরাপত্তায় সচেতন করা হয়। সবার সঙ্গে পঙ্ক্তিভোজ করেন পুলিশ সুপার।
ছিলেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আদিত্যবিক্রম মোহন হিরানি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ সিংহ রায়, এসডিপিও (ঝালদা) গৌরব ঘোষ, বিডিও (বাঘমুণ্ডি) আর্য তা, বাঘমুণ্ডি থানার আইসি বাপ্পা মিত্র প্রমুখ।
পাহাড়ের চিরুবেড়া গ্রাম থেকে আসা সুষেন মুর্মু বলেন, ‘‘চোখ ও শারীরিক নানা সমস্যা রয়েছে। এখানে এসে চশমা এবং ওষুধ নিখরচায় পেয়ে ভাল লাগছে।’’