অস্ত্র কারখানায় অভিযান চালিয়ে ধৃত দু’জনকে নিয়ে যাচ্ছে লাভপুর থানার পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বেআইনি অস্ত্র কারখানায় অভিযান চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হল বীরভূমের লাভপুর থানার পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে মুড়িমুড়কির মতো বোমা ছোড়া হয়, চলে গুলিও। হামলায় আহত হয়ে এক পুলিশকর্মীর পা ভেঙেছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করেছে দু’জনকে।
লাভপুর থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, লাভপুরের হাতিয়া গ্রামে চলছে বেআইনি অস্ত্র কারখানা। বুধবার দুপুর তিনটে নাগাদ সেখানে অভিযান চালায় বিশাল পুলিশবাহিনী। সেখানেই পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি ও গুলি চলে বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, অস্ত্র কারবারিদের ধরতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে লাগাতার বোমা ছুড়তে থাকে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ অস্ত্র কারখানা থেকে দু’টি ওয়ান শটার পাইপগান, দু’টি মাস্কেট এবং আট রাউন্ড গুলি-সহ অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত আরও বিভিন্ন সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করে। গ্রেফতার করে কারখানার দুই কর্মীকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে এক জনের নাম শেখ আব্বাসুদ্দিন। ২৩ বছরের আব্বাসুদ্দিনের বাড়ি লাভপুর থানার হাতিয়া গ্রামেই। ধৃত অপর অভিযুক্তের নাম শেখ জামাল। ৫০ বছরের জামালের বাড়ি পারুই থানার কেন্দুয়া গ্রামে।
পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। সূত্রের খবর, তাঁর পা ভেঙেছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশের উপর গুলিবৃষ্টি এবং বোমাবাজির খবর জানতে পেরে বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়াল লাভপুর থানায় চলে আসেন। ধৃত দুই দুষ্কৃতীকে বৃহস্পতিবার বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়।
প্রসঙ্গত, গত আড়াই বছরে লাভপুর থানার পুলিশকে এই নিয়ে পর পর চার বার বোমা মারার ঘটনা ঘটল। শুধু হাতিয়া গ্রামেই পর পর দু’বার আক্রান্ত হল পুলিশ। ২০২১ সালের ১৫ অগাস্ট রাতে লাভপুর থানার পুলিশ নকল সোনার কয়েনের ব্যবসায়ীদের ধরতে গিয়ে অসাধু কয়েন ব্যবসায়ীদের হাতে আক্রান্ত হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা মারা হয়। তার পরের দিন অর্থাৎ ১৬ অগাস্ট তৎকালীন এসডিপিওর নেতৃত্বে লাভপুর থানার পুলিশ অকুস্থলে গেলে ফের পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা মারে নকল সোনার কয়েন ব্যবসায়ীরা। তার পর, ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি লাভপুর থানার মীরবাঁদ পুলিশ ক্যাম্পের অফিসার পার্থসারথি সাহা দর্বারপুর গ্রামে একটি মেলায় ডিউটি করছিলেন। কর্মরত অবস্থায় ওই অফিসারকে লক্ষ্য করে বোমা মারার অভিযোগ উঠেছিল। পিঠে বোমা লেগে গুরুতর আহত হয়েছিলেন ওই অফিসার। বুধবার দুপুরে আবার লাভপুরের হাতিয়া গ্রামে আক্রান্ত হল পুলিশ।