সেতুর উপর দিয়ে বইছে কোপাই নদীর জল। সোমবার সকালে বোলপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলের তলায় বীরভূমের বিস্তীর্ণ অংশ। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে কোপাই নদী। পরিস্থিতি এমনই যে, গত কয়েক দিন আগে পর্যন্তও শীর্ণ খাত ধরে বয়ে চলা কোপাই শনিবার থেকে গোয়ালপাড়া সেতুর উপর দিয়ে বইছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কোপাই নদী সংলগ্ন কঙ্কালীতলার শক্তিপীঠ মন্দিরও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পুজো সংক্রান্ত দৈনন্দিন কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
অবিরাম বৃষ্টির কারণে কোপাই নদীর জল এতটাই বেড়েছে যে, আশপাশের গ্রামগুলিতে জল ঢুকে পড়েছে। নদী সংলগ্ন ফসলের জমিগুলি প্লাবিত হওয়ায় কৃষিকাজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শান্তিনিকেতন থেকে কসবা হয়ে পাড়ুই যাওয়ার জন্য এই গোয়ালপাড়া সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা এই সেতুটির উপর নির্ভর করেই বোলপুরে যাতায়াত করেন। গত মাসেও এক বার ভারী বৃষ্টির জেরে সেতুটি জলের তলায় চলে গিয়েছিল।
বোলপুর, শান্তিনিকেতন লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের বক্তব্য, প্রতি বছরই বর্ষায় কোপাই নদীর জল বাড়লে গোয়ালপাড়া সেতু ডুবে যায়। বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াত। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেতুটির উচ্চতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা কিংবা অন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা প্রশাসন করেনি বলে অভিযোগ তাঁদের।
অন্য দিকে, কোপাইয়ের জল বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হাঁটুসমান জলে ডুবেছে কঙ্কালীতলা মন্দির সংলগ্ন এলাকা। মন্দিরের চাতালেও জল থাকায় আপাতত ভক্তেরা সেখানে পুজো দিতে পারছেন না। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জল বার করার চেষ্টা করা হলেও কোপাইয়ের জলস্তর না নামলে কোনও চেষ্টাই সফল হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি শক্তি হারিয়ে ক্রমশ ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর ছত্তীসগঢ়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সোমবার থেকে কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ কমলেও পশ্চিমের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বীরভূমেও। এই পরিস্থিতিতে সোমবার সকালে সিউড়ির তিলপাড়া জলাধার থেকে সাত হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে তিলপাড়া সংলগ্ন এলাকার গ্রামগুলি নতুন করে প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।