bankura

হাতির হানায় বাঁকুড়ায় হুড়মুড়িয়ে ভাঙল বাড়ির দেওয়াল, ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু গৃহকর্ত্রীর!

স্থানীয় সূত্রে খবর, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ওই হাতিগুলির মধ্যে চারটি হাতি সোমবার রাতে একযোগে হানা দেয় বড়জোড়া ব্লকের খাঁড়ারি গ্রামে। একের পর এক বাড়ির দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত করে তারা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বড়জোড়া শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ১৭:২০
house collapsed

হাতির হানায় ভেঙে পড়া দেওয়াল। —নিজস্ব চিত্র।

হাতির শুঁড়ের ঠেলায় হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল বাড়ির দেওয়াল। সেই দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক বধূর। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের খাঁড়ারি গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার নাম বাসন্তী মণ্ডল। ৪৬ বছর বয়সি ওই মহিলার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগে এখন ছ’টি হাতি রয়েছে। এর মধ্যে বড়জোড়া রেঞ্জের পাবয়ার জঙ্গলে তিনটি, সাহারজোড়ার জঙ্গলে একটি এবং গঙ্গাজলঘাঁটি রেঞ্জের সারংপুরের জঙ্গলে দু’টি হাতি রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ওই হাতিগুলির মধ্যে চারটি হাতি সোমবার রাতে একযোগে হানা দেয় বড়জোড়া ব্লকের খাঁড়ারি গ্রামে। ওই গ্রামে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে তাণ্ডব চালিয়ে একের পর এক বাড়ির দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত করে তারা। ওই সময় বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন বাসন্তী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। আচমকাই একটি হাতি তাঁদের বাড়ির দেওয়ালে ধাক্কা দেয়। হুড়মুড় করে দেওয়াল ভেঙে পড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় দেওয়াল চাপা পড়েন বাসন্তী। পরিবারের অন্যান্যদের চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তাঁরা প্রথমে হাতির দলকে গ্রামছাড়া করেন। পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে আহত মহিলাকে উদ্ধার করে বড়জোড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

মৃতার আত্মীয় সুজয় মণ্ডল বলেন, ‘‘রাত ২টো নাগাদ একটি হাতি এসে আমাদের বাড়ির দেওয়ালে ধাক্কা দিয়ে সেটিকে ভেঙে ফেলে। দেওয়ালের ভাঙা অংশের নিচে চাপা পড়ে যান আমার কাকিমা। মঙ্গলবার চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা গিয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায় বন দফতরের। বন দফতর ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই হাতিগুলিকে লোকালয় লাগোয়া এলাকার জঙ্গলে রেখে দিচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির খবর পেলে বনকর্মীরা গ্রামে এসে শুধু ছবি তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমরা চাই, দ্রুত হাতিগুলিকে এলাকা থেকে সরানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ করুক বন দফতর।’’ গ্রামের বাসিন্দা তথা বড়জোড়ার প্রাক্তন বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ও হাতির দলকে জঙ্গলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন।

এই ঘটনা নিয়ে বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও প্রদীপ বাউড়ি বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারকে প্রাথমিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জঙ্গলের মধ্যেই হাতিগুলির গতিবিধি যাতে সীমাবদ্ধ থাকে, তার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement