দুপুর-রাতের খাবার খাওয়ার মধ্যে কতটা ব্যবধান থাকা উচিত? ছবি: সংগৃহীত।
কী খাচ্ছেন? তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কখন খাচ্ছেন!
নীরোগ থাকতে গেলে এখন এই পন্থায় বিশেষ জোর দিচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা। বিপাকহার, শরীরে শক্তির জোগান, হজমশক্তি এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য এই নিয়ম মেনে চলা জরুরি। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, দুপুর এবং রাতের খাওয়ার মধ্যে অন্তত পক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার ব্যবধান থাকা প্রয়োজন।
কেন এই ব্যবধান? কী সুবিধা হবে তাতে?
সকালের জলখাবার ভারী হওয়া উচিত। পরিমাণে তার চেয়ে কম খাবার খেতে হয় দুপুরে। আবার, রাতের খাবারের পরিমাণ হওয়া উচিত যৎসামান্য। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তেমনটা হয় না। গেরস্তবাড়িতে জলখাবারের পরিমাণের প্রায় দ্বিগুণ খাবার খাওয়া হয় দুপুরে। রাতে কম খাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। উল্টে তেলমশলা দেওয়া রগরগে খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জেগে ওঠে রাতে। অর্থাৎ, বোঝা যাচ্ছে গোটা ব্যবস্থাই প্রথম থেকে উল্টো। তার মধ্যে যদি জীবনধারায় পরিবর্তন আনতেই হয়, সে ক্ষেত্রে গোটা ব্যবস্থাকে নির্দিষ্ট সময়ে বেঁধে ফেলতে হবে। পুষ্টিবিদ ইন্দ্রাণী ঘোষের মতে, “দুপুরে সাধারণত যে ধরনের খাবার খাওয়া হয়, তা হজম করতে পাকস্থলীর কমপক্ষে চার ঘণ্টা সময় লাগে। তার পর বিকেলে চা, সঙ্গে হালকা কোনও খাবার খেলেন। তারও ঘণ্টা দুয়েক পর রাতের খাবার খাওয়া। হিসাব করে দেখতে গেলে, মোটামুটি ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার ব্যবধান হয়েই যায়। এইটুকু সময় দিতে না পারলে হজমের সমস্যা হবেই। অনেকেই পেটফাঁপার সমস্যায় ভোগেন। ওজনেও হেরফের হতে পারে।”
দু’টি খাবার খাওয়ার মধ্যে ব্যবধান রাখা কেন জরুরি?
খাবার খাওয়ার পর তা হজম করা এবং তা থেকে পুষ্টিগুণ শোষণ করা পর্যন্ত দীর্ঘ প্রক্রিয়া চলে। সেই প্রক্রিয়া যেমন জটিল, তেমনই সময়সাপেক্ষ। তাই দু’টি খাবারের মধ্যে যথেষ্ট ব্যবধান রাখা প্রয়োজন। ইন্দ্রাণী বলেন, “দুপুরের খাবার খাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই যদি রাতের খাবার খেয়ে নেন, সে ক্ষেত্রে শরীরে অপ্রয়োজনীয়, অতিরিক্ত ক্যালোরি জমা হবে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে। আবার দু’টি খাবার খাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে যদি অনেকটা ব্যবধান থাকে, তা হলে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে যাবে।”
খাবার খাওয়ার সঠিক সময় নির্ধারণ করবেন কী ভাবে?
যাঁরা মোটামুটি ৯টা-৫টার গতে বাঁধা চাকরি করেন, তাঁদের জন্য সময় নির্ধারণ করা তুলনামূলক ভাবে সহজ। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, দুপুরে খাবার খাওয়ার সময়টা মনে রেখে রাতের খাবার খাওয়ার সময় নির্ধারণ করে নিলেই হবে। মোটামুটি ৬ থেকে ৭ ঘণ্টার ব্যবধান যেন থাকে, তা দেখে নিলেই হবে।