নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে রাজ্যের মন্ত্রীর বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধার করল ইডি! পাওয়া গেল কত টাকা?

রাজ্যের এক মন্ত্রীর বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধার করল ইডি। শুক্রবার বোলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্ষুদ্র এবং কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বাড়িতে দিনভর তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৪১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে চন্দ্রনাথের একটি মোবাইলও। সেই মোবাইল খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। ইডি জানিয়েছে, চন্দ্রনাথের বাড়ি থেকে বেশি কিছু নথিও উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া টাকার উৎস নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি বলেও খবর ইডি সূত্রে।

শুক্রবার সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ইডির আধিকারিকেরা চন্দ্রনাথের বোলপুরের বাড়িতে ঢোকেন। ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান এবং জেরা সেরে গোয়েন্দারা রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান। সেই সাড়ে ১৪ ঘণ্টার তল্লাশিতেই ওই নগদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। ইডি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর চন্দ্রনাথ জানান, ইডির আধিকারিক তাঁকে যে প্রশ্ন করেছেন, তার জবাব দিয়েছেন।

ইডি সূত্রে খবর, রাজ্যের প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলাকালীন চন্দ্রনাথের নাম উঠে আসে তদন্তকারীদের হাতে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত বলাগড়ের বহিষ্কৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের সূত্র ধরেই রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথের বাড়িতে অভিযান চালানো হয় বলেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নেমে কুন্তলের বাসস্থানে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। সেই তল্লাশি অভিযানের সময় একটি রেজিস্টার খাতা তদন্তকারী আধিকারিকদের হাতে আসে। সেখানে ১০০ জন চাকরিপ্রার্থীর তালিকাও পাওয়া যায়। চন্দ্রনাথের মাধ্যমেই ওই ১০০ জন চাকরিপ্রার্থী কুন্তলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে মনে করছেন ইডি আধিকারিকেরা। ইডি সূত্রে খবর, কুন্তল এবং চন্দ্রনাথের মধ্যে এক জন মিডলম্যান ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেও চন্দ্রনাথের নাম উঠে এসেছে বলে খবর ইডি সূত্রে।

তার প্রেক্ষিতেই ইডির আধিকারিকেরা মন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছন। সকালে যখন ইডি পৌঁছয়, তখন নিজের বাড়িতে ছিলেন না চন্দ্রনাথ। ছিলেন গ্রামের বাড়ি মুরারইতে। সাড়ে ১০টার কিছু ক্ষণ পরে চন্দ্রনাথ মুরারইয়ের বাড়ি থেকে বোলপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। বোলপুরের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী এবং দুই ছেলে রয়েছেন। সকালে বাড়িতে ঢোকার সময় চন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘‘আমি জানি না কেন ইডি আধিকারিকেরা আমার বাড়িতে হানা দিলেন। আমি খবর পেয়ে যাচ্ছি। আমাকে কোনও আগাম নোটিস দেওয়া হয়নি। আজ থেকে আমার ছেলের পরীক্ষা শুরু। আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমার ছেলেই আমাকে ফোন করে বলে ইডি এসেছে। ইডি আধিকারিকেরা ফোন করে ডেকেছেন। আমি যাচ্ছি।’’ আর বাড়ি ছেড়ে ইডির গোয়েন্দারা বেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা যা বলেছেন, আমরা সহযোগিতা করেছি। যা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেন, আমরা তার উত্তর দিয়েছি। ওঁরা সেটা বুঝেছেন। আর কিছু না।’’