শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এক ছাত্রকে বরখাস্ত করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
জমি বিতর্কে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালেয়ের বিবাদ এখনও মেটেনি। সেই আবহেই অমর্ত্যের পক্ষ নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোপে পড়লেন এক পড়ুয়া। বিশ্বভারতীর পল্লিশিক্ষা ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র তথা এসএফআইয়ের সদস্য সোমনাথ সৌকে বুধবার সাসপেন্ড করলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই পড়ুয়াকে শো-কজও করা হয়েছে। চিঠিতে শৃঙ্খলাভঙ্গ নিয়ে কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পক্ষে বুধবার এই সংক্রান্ত নোটিস জারি হয়েছে।
অমর্ত্যকে সমর্থনের পাশাপাশি বিশ্বভারতী নিয়ে নানা বিতর্কিত বিষয়েও ফেসবুকে লিখেছিলেন সোমনাথ। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার জন্য সোমনাথের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক বিতর্কিত পোস্ট করায় নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন ওই ছাত্র। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার অভিযোগে এক সেমেস্টারের জন্য ওই পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধাচারণ-সহ একাধিক বিষয়ে সমাজমাধ্যমে মত পোষণের অভিযোগে এই শাস্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, সর্বসম্মতি ক্রমে তৃতীয় সেমিস্টারে সোমনাথকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পড়ুয়াদের একাংশের মতে, তৃতীয় সেমিস্টার স্থগিত করা মানেই প্রায় এক বছর নষ্ট হওয়া। প্রতিবাদী পড়ুয়াকে শো-কজ করা নিয়ে ফের জটিলতা তৈরির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিশ্বভারতীতে। এর আগেও নানা কারণে একাধিক বার সাসপেন্ড করা হয় সোমনাথকে।
সোমনাথের পাল্টা দাবি, “উপাচার্যের বিরুদ্ধে মুখ খোলার কারণেই এই শাস্তি পেতে হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। প্রয়োজনে আইনি সাহায্য নিতেও পিছপা হব না।” নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্বভারতীর এক পড়ুয়া কথায়, “উপাচার্য গত পাঁচ বছর ধরে স্বৈরাতন্ত্র চালাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কথা বললেই হয় জুটছে সাসপেনশন, নয়তো শো-কজের নোটিস। বাদ যাননি অধ্যাপকেরাও। বিরুদ্ধস্বর হলেই হয় বদলি, নয় বাতিলের খাতায়। প্রয়োজনে আইনের পথ অনুসরণ করা হবে।”