—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আগামী মরসুম থেকে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রে ফের ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাক শোনা যাবে কিনা, তার আভাস মিলতে পারে জানুয়ারি মাসের শেষ দিনে। ৩১ জানুয়ারি চা পর্ষদের বোর্ড মিটিং রয়েছে। সেখানে দেশের চা নিলাম নিয়ে আলোচনা হবে। বেশ কিছু চা নিলাম কেন্দ্র নিয়েও আলোচনার কথা রয়েছে। দেশের চা নিলাম ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করেছিল চা পর্ষদ। সেই কমিটির সুপারিশ, দেশে উৎপাদিত চায়ের বেশিরভাগ অংশ নিলামে নিয়ে আসা।জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র নিয়ে এর আগেই চা পর্ষদ ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছিল। সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের ‘অনলাইন’পরিকাঠামো নতুন করে গড়ে তুলতে পর্ষদ বরাদ্দও করেছে। সে কারণেই চা পর্ষদের বোর্ডের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র।
জেলার উৎপাদিত চায়ের ব্যবসা জেলাতেই হলে ডুয়ার্স অর্থাৎ মালবাজার, নাগরাকাটা থেকে ওদলাবাড়ি, বানারহাট— সর্বত্রই অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হত বলে দাবি। চা নিলাম কেন্দ্র চেয়ে জলপাইগুড়িতে দীর্ঘ আন্দোলনও করা হয়েছিল। অবরোধ থেকে বন্ধও হয়েছিল শহরে। ‘চা বাগানের জেলা’ জলপাইগুড়িতে কেন চা নিলাম কেন্দ্র থাকবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছিল জেলারশিল্পমহল। যদিও চা নিলামকেন্দ্র চালু হওয়ার পরে দীর্ঘদিন তা স্থায়ী হয়নি।
২০০৫ সালে ঘটা করে চা নিলাম কেন্দ্র উদ্বোধনের পরেই নিলাম অনিয়মিত হয়ে পড়ে। মূল সঙ্কট চা পাতার জোগানের। সে কারণেই নিলাম বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্কট মিটে যাওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা না গেলেও, চা নিলাম কেন্দ্র চালু করতে একাধিক বিকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে কেন্দ্রের পরিচালন সমিতি। কখনও প্রধানমন্ত্রীর দফতর, কখনও বাণিজ্য মন্ত্রকে তথ্য জানার অধিকারে আবেদন, প্রস্তাবও গিয়েছে। দীর্ঘ আলোচনা, বৈঠকের পরে ফের আশার আলো দেখা গিয়েছে চা নিলাম কেন্দ্র নিয়ে।
জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেছেন, “চা নিলাম কেন্দ্র নিয়ে আমরা আশাবাদী। অনেকের সঙ্গেই কথা চলছে আমাদের।” জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রে গুড়ো চা বিক্রির প্রস্তাবরয়েছে। তেমন হলে ডুয়ার্সের বিভিন্ন বাগান, আলিপুরদুয়ার জেলার বাগানও জলপাইগুড়িতে গুঁড়ো চা পাঠাতে পারবে। নাগরাকাটা, মালবাজারের বহু চা বাগানের গুড়ো চা জলপাইগুড়িতে নিলাম হতে পারবে।
সম্প্রতি চা পর্ষদ চিঠি পাঠিয়ে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরির কথা জানিয়েছে। চা পর্ষদের সদস্য তথা নিলাম কেন্দ্রের পরিচালন সমিতির সহ-সভাপতি পুরজিৎ বক্সিগুপ্ত বলেন, “চা পর্ষদে আমাদের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। দেখা যাক।”
নিলাম কেন্দ্রের অন্যতম সদস্য তথা ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিস্টা-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “চা পর্ষদের আগামী বোর্ড বৈঠকে জলপাইগুড়ি কেন্দ্র নিয়ে সদর্থক ঘোষণা থাকবে বলেই আশা রাখছি।”