Bengali Medium Schools

স্কুলে পড়ুয়া টানতে প্রচারে বাংলা মাধ্যম স্কুল

স্কুলে স্মার্ট ক্লাস রয়েছে। জিতেছে ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন অ্যাওয়ার্ড’। এলাকার অন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির নিরিখে এখানে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে, এমনও নয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৭
পড়ুয়া টানতে পথে প্রচারে।

পড়ুয়া টানতে পথে প্রচারে। —নিজস্ব চিত্র।

আসুন, আসুন, আসুন। নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আমাদের স্কুলে আপনার সন্তানকে ভর্তি করুন। যত্ন নিয়ে আপনার সন্তানকে শিক্ষার আলোয় পৌঁছে দেব।— বিজ্ঞাপনী ঢঙে ই-রিক্সার মাথায় মাইক বেঁধে এ ভাবে প্রচারে নেমেছে পুরুলিয়ার কাশীপুর বোর্ড বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়।

Advertisement

স্কুলে স্মার্ট ক্লাস রয়েছে। জিতেছে ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন অ্যাওয়ার্ড’। এলাকার অন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির নিরিখে এখানে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে, এমনও নয়। ফলে অদূর ভবিষ্যতে স্কুলটির অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে এমন সম্ভাবনাও নেই। বরং এলাকার অন্য একাধিক সরকারি প্রাথমিক স্কুলের তুলনায় এখানে পড়ুয়ার সংখ্যা খানিকটা বেশি।

প্রাক্‌ প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২১৬ জন পড়ুয়া। তাহলে কেন ভর্তির জন্য বিজ্ঞাপন নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে? স্কুল কর্তৃপক্ষের যুক্তি, এলাকায় বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা বাড়ছে। পাশের আদ্রায় রয়েছে একাধিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। স্কুলের শিক্ষক নন্দদুলাল গোস্বামী বলেন, ‘‘অনেকেরই এখন সরকারি স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করায় অনীহা দেখা যাচ্ছে। সঙ্গতিহীন অভিভাবকও সন্তানকে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করছেন। আমাদের প্রশ্ন, কেন যাবেন বেসরকারি স্কুলে? এখানে ভর্তি করে দেখুন, বাংলা মাধ্যমেই আপনার সন্তানকে শিক্ষার আলোয় পৌঁছে দিতে পারি কি না।’’

স্কুল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, বেসরকারি স্কুলে সন্তানকে পাঠানোর অভ্যাস গড়ে উঠলে এক দিন এই স্কুলের অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়তে পারে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভবিষ্যৎ-ও প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়তে পারে। স্কুল র্কতৃপক্ষ জানান, গত বছর তাঁরা এ ভাবে প্রচারে নেমেছিলেন। তাতে সাড়াও পান।

স্কুলের বারান্দা থেকে শ্রেণি কক্ষের দেওয়ালে সাধারণ জ্ঞান থেকে গণিত, ভূগোল ও বিজ্ঞানের নানা খুঁটিনাটি বিষয় লিখে রাখা হয়েছে। প্রবেশ পথের কাছে রয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের আবক্ষ মূর্তি। শ্রেণিকক্ষের নামকরণও হয়েছে রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের মতো মনীষীদের নামে।

প্রধান শিক্ষক বিষ্ণু শুক্লা জানান, পাঠ্যক্রমের বিষয় স্মার্ট ক্লাসের মাধ্যমে পড়ুয়াদের বোঝানো সহজ হয়েছে। শিক্ষক নন্দদুলাল বলেন, ‘‘আমরা চ্যালেঞ্জটা নিতে চাইছি। যে অভিভাবকেরা বাংলা মাধ্যম স্কুলে তাঁদের সন্তানদের ভর্তির কথা ভাবছেন, তাঁরা আসুন। তাঁদের বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষায় আমরা চেষ্টার ত্রুটি রাখব ।

পুরুলিয়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রলয়েন্দু ভৌমিক বলেন, ‘‘শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকার নানা পদক্ষেপ করছে। এই স্কুলটিও এলাকার মানুষজনের কাছে সেই মর্মেই আবেদন রাখছে। এটা সদর্থক চিন্তা ভাবনারই প্রকাশ।’’

Advertisement
আরও পড়ুন