নেশামুক্তি কেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।
নেশা ছাড়াতে নেশামুক্তি কেন্দ্রের উপরে ভরসা রেখেছিল পরিবার। বৃহস্পতিবার বোলপুর থানার অন্তর্গত জিলিপিতলা বাইপাসের সেই নেশামুক্তি কেন্দ্রেই মারা গেলেন চিকিৎসাধীন বিক্রম হাজরা। এর আগেও জেলার বেশ কয়েকটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে এমন ঘটেছিল। তাই এ বার ওই কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি চালানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও, নিজেরাই মামলার রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করছে পুলিশ।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এর আগে বোলপুরের মকরমপুর এলাকার একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে দুই রোগীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। কয়েক মাস আগে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার ভেদিয়া এলাকার একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে বোলপুরের এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। ফের প্রায় একই ঘটনা ঘটল।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নেশামুক্তি কেন্দ্র করতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মিনিস্ট্রি অব সোশ্যাল জাস্টিস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট’ থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র নিতে হয়। উল্লেখ করতে হয়, কত সংখ্যক অসুস্থকে ওই কেন্দ্রে রাখা হবে। সে অনুযায়ী উপযুক্ত পরিকাঠামো আছে কি না তা খতিয়ে দেখার পরে অনুমোদন ও সরকারি সহায়তাও দেওয়া হয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, কাউন্সিলরদের নজরদারিতেই নেশার কবলে পড়া রোগীদের সুস্থ করে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে সে সব ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের।
ফের বোলপুরেই মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় এই সমস্ত নেশামুক্তি কেন্দ্রের অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, জেলায় যে সব নেশামুক্তি কেন্দ্র চলছে, সেগুলির কোনটাই সরকারি অনুমোদিত নয় বা সরকারি অর্থ সাহায্যে চলে না। এই কেন্দ্রগুলি চলছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার নামে। বোলপুর বাইপাস এলাকায় গড়ে ওঠা ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের অনুমোদন ছিল কি না, উপযুক্ত পরিকাঠামো আছে কি না, চিকিৎসকেরা নিয়মিত যেতেন কি না— সে সব প্রশ্নের এ দিন কোন উত্তরই মেলেনি।
এ দিন ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে গিয়েও কারও দেখা মেলেনি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এমন ঘটনা জেলায় প্রায়ই ঘটছে। পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি আমরাও যৌথ ভাবে পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করছি। নেশামুক্তি কেন্দ্রগুলিতে কী ধরনের পরিকাঠামো থাকা উচিত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”