বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ আলোচনাসভায় আমন্ত্রিত বলিউড অভিনেতা অনুপম খের। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ আলোচনাসভায় আমন্ত্রিত বলিউড অভিনেতা অনুপম খের। আগামী ১৩ মার্চ বিশ্বভারতীর লিপিকা অডিটোরিয়ামে ৫৭তম ‘লেকচার সিরিজ’ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেখানে বক্তৃতা করতে পারেন মোদী-ঘনিষ্ঠ এই অভিনেতা। এই খবর সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। শান্তিনিকেতনের পড়ুয়া ওবং প্রবীণ আশ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সময়ে রাজনীতির রং লাগানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বর্তমান উপাচার্যের সময়ে নানা আলোচনা সভা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বিশ্বভারতীতে। কখনও ‘কালীপুজোর ধারণা’ শীর্ষক বক্তব্যের আয়োজন করা নিয়ে, কখনও আবার এনআরসি এবং সিএএ – এর পক্ষে আলোচনাসভা। এই সব আলোচনা সভাতেই বিজেপি-ঘনিষ্ঠদের দেখা গিয়েছে। অনুপমকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়েও শুরু হয়ছে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি নিয়ে তরজা।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, আগামী ১৩ বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ এই আলোচনা সভা রয়েছে। অনুপমের বক্তৃতার বিষয় ‘ব্যর্থতার ক্ষমতা’। যদিও লিপিকা অডিটোরিয়ামে অনুপম সশরীরে উপস্থিত থাকবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। বিশ্বভারতীর একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনলাইনে আলোচনায় অংশ নেবেন অনুপম।
সম্প্রতি অনুপমের ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস্’ ছবিটি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ছবিটিতে বিশেষ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। আবার বক্স অফিসেও সফল সিনেমাটি। পেয়েছে একাধিক পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমর্থক অনুপম। তাঁর স্ত্রী কিরণ খের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ।
অনুপমকে আমন্ত্রণ এবং আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে বিশ্বভারতীর প্রবীণ আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীদের একাংশের দাবি, ‘‘নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনার জন্য শান্তিনিকেতন আশ্রমের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ‘বিশ্বভারতী’ স্থাপনের পর সেই রীতি মেনেই ব্রহ্মোপাসনা চলে। এখনও প্রতি বুধবার এবং বিশেষ কয়েকটি দিনে উপাসনাগৃহে ব্রহ্মোপাসনা হয়। কিন্তু এখানে এই উপাচার্যের আমলে ‘কালীপুজোর ধারণা’, ‘বিজেপি কেন বিধানসভায় জিতল না’— এই সব বিষয়ে আলোচনা সভা হয়েছে। যা এই প্রতিষ্ঠান বিরোধী।’’
শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিক স্বপনকুমার ঘোষের কথায়, ‘‘ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে যে বিষয়গুলি নিয়ে সেমিনার হচ্ছে, তাতে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টাই স্পষ্ট হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে। এই প্রেক্ষাপটে অনুপমের বিশ্বভারতীর বক্তৃতা অনুষ্ঠান আরও বিতর্ক বাড়বে বলেই মনে করছি আমরা।’’