Piyali Basak

আট হাজারি শৃঙ্গ ছুঁয়ে আশি লাখ ঋণের পাহাড়ে পিয়ালি! চন্দননগরে হতাশ, তাকিয়ে কলকাতা বইমেলার দিকে

দীর্ঘ দিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটের সঙ্গে যুঝছে পিয়ালির পরিবার। পিয়ালিও দিল্লির এমসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ২০১৬ সালে তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। ব্যক্তিগত জীবনে লড়াই চললেও পর্বতারোহণ থেমে থাকেনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৩০
বইমেলার স্টলে পিয়ালি বসাক।

বইমেলার স্টলে পিয়ালি বসাক। —ফাইল চিত্র।

ছ’টি আট হাজারি শৃঙ্গ ছোঁয়া হয়ে গিয়েছে বঙ্গকন্যার। হুগলির সেই পিয়ালি বসাক এখন আশি লাখের দেনার পাহাড়ে! নিজে তো অসুস্থই, বাবাও শয্যাশায়ী। সম্প্রতি মায়েরও মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিপুল ঋণের চাপে চন্দননগরের বইমেলায় স্টল দিয়েছিলেন পিয়ালি। কিন্তু তেমন সুরাহা হল না! খানিক হতাশা গ্রাস করলেও তাঁকে দেখে বোঝবার জো নেই! স্টলে কেউ এলে হাসিমুখেই তাঁর সঙ্গে কথা বলছেন। শোনাচ্ছেন পাহাড়ে চড়ার অভিজ্ঞতা। কী ভাবে শৃঙ্গজয় করতে হয়, তা-ও শেখাচ্ছেন। পাড়ার বইমেলায় বিক্রিবাটা আশানুরূপ না হলেও নিরাশ নন পিয়ালি। আপাতত কলকাতা বইমেলার দিকেই তাকিয়ে তিনি। পিয়ালির কথায়, ‘‘কলকাতা বইমেলাতেও আমি থাকব। বহু মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। আমার ভাল লাগে এ সব!’’

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটের সঙ্গে যুঝছে পিয়ালির পরিবার। পিয়ালিও দিল্লির এমসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ২০১৬ সালে তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। ব্যক্তিগত জীবনে লড়াই চললেও পর্বতারোহণ থেমে থাকেনি। ২০১৮ সালে মানাসুলু, ২০২১ সালে ধবলাগিরি, ২০২২ সালে এভারেস্ট ও লোৎসে জয়। তার পর ২০২৩-এর এপ্রিম ও মে মাসে অন্নপূর্ণা ও মাকালু জয় করেন পিয়ালি। কিন্তু এই পাহাড়প্রেমের জন্য ঋণের বোঝা বাড়তে বাড়তে ৮০ লাখে পৌঁছে গিয়েছে। শেষ মাকালু অভিযানের পর সব মিলিয়ে ৩২ লক্ষ ২৭ হাজার টাকার বিল ধরিয়েছে আয়োজক সংস্থা। পরিবার সূত্রে দাবি, টাকা মেটাতে না পারায় অন্নপূর্ণা ও মাকালু জয়ের শংসাপত্র হাতে পাননি পিয়ালি। একের পর এক আট হাজারি শৃঙ্গ ছুঁয়ে এলেও এখনও পিয়ালির প্রতি সদয় হননি স্পনসরেরা। এভারেস্ট ছোঁয়ার পরে সরকার প্রদত্ত ৭ লক্ষ টাকাও এখনও পাননি!

এই পরিস্থিতিতে চন্দননগরে স্থানীয় ইস্পাত সঙ্ঘ আয়োজিত বইমেলায় স্টল দিয়েছেন পিয়ালি। পাহাড় থেকে নিয়ে আসা জুতো, জ্যাকেটই রাখা তাঁর সেই স্টলে। গত ২৩ ডিসেম্বর শুরু হওয়া সেই মেলায় এখনও পর্যন্ত ৮০০ টাকার দু’টি জ্যাকেট বিক্রি হয়েছে বলে জানালেন পিয়ালির ছোট বোন তমালি বসাক। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা আসছেন, তাঁদের অধিকাংশেরই পর্বতারোহণে উৎসাহ।’’ পিয়ালি অবশ্য জানাচ্ছেন, যে সব পর্বতারোহীরা ঠিক মতো প্রশিক্ষণ নিতে পারেন না, তাঁদের জন্যই এই স্টল দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়। ‘‘অনেক ছেলেমেয়েরই পর্বতারোহণে উৎসাহ রয়েছে। তাঁদের মনে অনেক প্রশ্ন। ওঁদের সেই সব প্রশ্নের উত্তর যথাসম্ভব দেওয়ার চেষ্টা করছি। কম খরচে কী ভাবে পর্বতারোহণ করা যায়, সেটা ওঁদের জানাচ্ছি। পাহাড়ে অনেক ধরনের প্রতিকূলতা থাকে। সেটাও সকলের জানা দরকার।’’

Advertisement
আরও পড়ুন