গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
নিয়োগ মামলার তদন্তে ইডির মুখোমুখি হলেন আরও এক ‘পার্থ’। ইনি পার্থ সরকার। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আপ্তসহায়ক হিসাবে কাজ করেছেন দীর্ঘ দিন। আবার পার্থের পাড়ার কাউন্সিলরও। মঙ্গলবার সেই পার্থকেই তলব করেছিল ইডি। এর আগে ইডির তলব এড়ালেও মঙ্গলবার তিনি সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে আসেন। রাত পর্যন্ত সিজিওতে জেরা করা হয় তাঁকে। ন’টা নাগাদ তিনি বেরিয়ে আসেন।
পার্থ-ঘনিষ্ঠ এই পার্থ রাজনৈতিক মহলে ‘ভজা’ নামেই অধিক পরিচিত। ইডির কাছে তাঁর নাম প্রথম জানিয়েছিলেন নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। ইডি সূত্রে খবর, কুন্তল বলেছিলেন, বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীর থেকে টাকা তোলার পর যাঁদের হাতে প্রায় ১০ কোটি টাকা তিনি তুলে দিয়েছিলেন, তার মধ্যে এক জন ছিলেন এই ভজা ওরফে পার্থ। তদন্তকারীদের ধারণা, অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা এবং কয়েক কোটি টাকা ভজার মাধ্যমেই পৌঁছেছিল পার্থর কাছে। এমনকি, এই ভজার সঙ্গে ‘কালীঘাটের কাকু’রও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলেও সন্দেহ ইডির।
কিন্তু নিয়োগ মামলার তদন্তে ভজাকে বহু বার জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডেকে পাঠালেও ভজা হাজিরা দেননি। বেশ কয়েক বার সিবিআইয়ের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। কিন্তু ইডির সমন এড়িয়ে গিয়েছেন বার বার। এর আগে গত ডিসেম্বরে এক বার ইডির সমন গিয়েছিল ভজার কাছে। তখন কিছু দিনের সময় চেয়েছিলেন ভজা। গত ১৯ জানুয়ারি আবার ভজাকে ইডির তরফে সমন পাঠানো হয়। অবশেষে সেই সমনে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার সিজিওতে আসেন পার্থ-ঘনিষ্ঠ ভজা।
প্রসঙ্গত, ভজা ওরফে পার্থের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের যোগাযোগ বহু দিনের। পার্থ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা থাকাকালীন তাঁর বাসের ব্যবসার দেখভাল করতেন ভজা। পরে পার্থ মন্ত্রী হওয়ার পর ভজার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ইডি সূত্রে খবর, পার্থের আর্থিক লেনদেনের কাজ পুরোটাই দেখভাল করতেন ভজা। পার্থের সুপারিশেই তিনি পার্থের পাড়ায় কলকাতা পুরসভার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলরও হন। তবে পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর এই প্রথম ইডির জেরার মুখোমুখি হলেন ভজা।