বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পাহারায় রাজ্য পুলিশের কর্মীরা। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
এত দিন ‘জ়েড ক্যাটেগরি’ নিরাপত্তা পেতেন। কিন্তু তিনি এখন জেলে। এর ফলে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সেই নিরাপত্তা আপাতত তুলে নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু বোলপুর শহরের নিচুপট্টিতে অনুব্রতের বাড়ি ‘পাহারার’ দায়িত্বে এখনও বহাল রাজ্য পুলিশের কর্মীরা।
রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের পরামর্শ মেনে ২০১৩ সালের গোড়ায় রাজ্যে যে ক’জন তৃণমূল নেতাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল, সেই তালিকায় ছিলেন অনুব্রতও। জেলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ‘জ়েড ক্যাটেগরি’ নিরাপত্তা পেতেন। তাঁকে সর্বক্ষণ ঘিরে থাকতেন সশস্ত্র ছ’জন দেহরক্ষী। এঁদেরই এক জন ছিলেন সেহগাল হোসেন, যিনি নিজেও গরু পাচার মামলায় আপাতত আসানসোল জেলে অনুব্রতের কাছাকাছিই রয়েছেন। সেই সময় থেকে অনুব্রতের বাড়ি পাহারাতেও রাজ্য পুলিশের চার কর্মীকে মোতায়েন করা হয়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বীরভূমের কেষ্টর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়িয়ে নিযুক্ত করা হয় চার সশস্ত্র মহিলা রক্ষীকেও। এমনকি বিভিন্ন মিটিং-মিছিল কিংবা জনসভা করার সময় বম্ব স্কোয়াডের একটি টিমও মোতায়েন থাকে অনুব্রতের জন্য।
কিন্তু, চলতি মাসে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হতেই তুলে নেওয়া হয়েছে ‘জ়েড ক্যাটেগরি’ নিরাপত্তা এবং চার মহিলা নিরাপত্তা রক্ষীকে। তবে বর্তমানে তাঁর বাড়ির নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন রয়েছেন রাজ্য পুলিশের এক জন এএসআই পদমর্যাদার অফিসার এবং তিন জন কনস্টেবল। অনুব্রত জেল হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও এখনও কেন তাঁর বাড়িতে রাজ্য পুলিশ ‘পাহারা’ দিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “গরু পাচারের মতো গুরুতর মামলায় যিনি অভিযুক্ত হিসাবে জেলে রয়েছেন, তাঁর বাড়িতে পাহারায় সরকারি পুলিশকর্মীদের থাকার বিষয়টি বহু মানুষ অন্য চোখে দেখছেন।’’ বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অষ্টম মণ্ডলের দাবি, ‘‘প্রশাসন সরকারের দলদাস হিসাবে কাজ করছে। তাই এক জন অপরাধীর বাড়িতেও এখনও রাজ্য পুলিশের কর্মী দিয়ে পাহারা দেওয়া হচ্ছে।’’ বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “যে হেতু উনি (অনুব্রত) এই মুহূর্তে হেফাজতে রয়েছেন, তাই ওঁর নিরাপত্তারক্ষীদের সরানো হয়েছে। তবে, পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ‘হাউস গার্ড’ রয়েছে।”