মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলা মিটে গেলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। রাজ্যে ২-৩ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে বুধবার বিধানসভায় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য জানিয়েছে, ওবিসি সংরক্ষণের বিষয়ে নতুন করে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। কারা ওবিসি তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য তা যাচাই করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশমতোই নতুন করে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় ওবিসি মামলার শুনানি তিন মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক। সেইমতো রাজ্যকে তিন মাস সময় দিল শীর্ষ আদালত। রাজ্যের আর্জি শোনায় সুপ্রিম কোর্টের প্রশংসাও করেছেন মমতা।
মমতা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট ওবিসি নিয়ে গত কাল একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। খারাপ কিছু বলেনি। এই সমস্যা মিটে গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুলিশ মিলিয়ে প্রায় ২-৩ লক্ষ নিয়োগ হবে।’’ পাশাপাশি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বার বার বিরোধীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সেটাকে আটকানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিরোধীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে শত্রুতা করে নিয়োগ আটকাবেন না।’’
রাজ্যে ওবিসি শংসাপত্র পদ্ধতি মেনে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। গত ২২ মে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দেয়। হাই কোর্টের নির্দেশে প্রায় ১২ লক্ষ শংসাপত্র অকেজো হয়ে যায়। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। হাই কোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরও।
মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে নতুন করে সমীক্ষার কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালতের কাছে তিন মাস সময় চায় রাজ্য সরকার। সিব্বলের আর্জি শুনে বিচারপতি বি আর গবই জানতে চান, রাজ্যের নতুন করে সমীক্ষা করা নিয়ে অন্য পক্ষের কোনও আপত্তি রয়েছে কি না। তাতে রাজ্যের আইনজীবী জানান, অন্য পক্ষের আপত্তি থাকার কথা নয়। কারণ, অন্য পক্ষের আবেদনই ছিল যাতে ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে নতুন করে সমীক্ষা করা হয়।
এর পরে রাজ্যের আবেদন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, জুলাই মাসের পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তবে নতুন সমীক্ষা চললেও এই মামলার ভবিষ্যতের উপরেই রাজ্যের পদক্ষেপ নির্ভর করবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।