(বাঁ দিকে) প্রৌঢ় আব্দুর শুকুর মোল্লা এবং বিডিও রবীন্দ্রনাথ অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
বয়স ৫৬। স্ত্রী গত হয়েছেন বছর দশেক আগে। একাকিত্বের জীবনে আবার বিয়ে করে সংসার পাতার শখ জেগেছে প্রৌঢ়ের। কিন্তু পাকা বাড়ি নেই বলে বিয়ে হচ্ছে না। এই অবস্থায় সোজা বিডিওর কাছে গিয়ে প্রৌঢ়ের আবেদন— ‘‘হুজুর একটা ঘর দেন। বিয়ে করব!’’
প্রৌঢ়ের এই আবেদনে কার্যত ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হয়েছিল মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা ১ ব্লকের বিডিও রবীন্দ্রনাথ অধিকারীর। শেষমেশ বিডিওকে ‘আশ্বাস’ দিতে হয়েছে। আশ্বাস পাওয়ার পরেই বিডিও অফিস ছেড়েছেন বেলডাঙা ১ ব্লকের বেগুনবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজিসহ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর শুকুর মোল্লা।
পাঠকাটির বেড়া দেওয়া মাটির চালা ঘরে বাস আব্দুরের। স্ত্রী বিয়োগের পর মুখ ফিরিয়েছেন সন্তানেরা। এই অবস্থায় আবার সংসার করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন আব্দুর। তিনি জানান, বার কয়েক সম্বন্ধও এসেছিল। কিন্তু কুঁড়েঘরের জন্য তা ভেস্তে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই আবাস যোজনার ঘর পেতে বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
আব্দুর বলেন, ‘‘যদি একটি ঘরের ব্যবস্থা হয়, তবে হয়তো বিয়েটা হবে। মাটির ঘরে কেউ বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না। বিডিও সাহেব বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি সেই আশায় রইলাম।’’
দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রথম এমন আবদার শুনে স্বাভাবিক ভাবেই অবাক হয়েছিলেন বিডিও। তিনি বলেন, ‘‘বিয়ে করার জন্য কেউ ঘর চাইছেন, এমন আবেদন আমার কর্মজীবনে আসেনি। তবে নতুন করে নাম সংযোজনের যদি কোনও সুযোগ আসে, নিশ্চয়ই ওঁর আবেদন আইন অনুযায়ী খতিয়ে দেখা হবে। ওঁকে একটি আবেদনপত্র অফিসে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’