চা বাগানে কর্মরত শ্রমিক। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চায়ের কাপ থেকে রাসায়নিক বিষ দূরে রাখতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ বার চা বাগানে রোগপোকা দমন করা যাবে, নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার। দু’দিন ধরে ক্ষুদ্র চা চাষিদের এমন পাঠই দিলেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি সংস্থা।
সম্প্রতি কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ে তোলপাড় হয়েছে চা বলয়। তৈরি চায়ের নমুনা পরীক্ষায় মিলেছে কীটনাশক। তা নিয়ে তোলপাড় চা বাণিজ্য মহল। চা পাতায় দীর্ঘদিন ধরেই নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। কীটনাশকের মাত্রা বেশি হওয়ায় কমছে রফতানিও। সম্প্রতি কীটনাশকের উপস্থিতি চা পর্ষদেরই পরীক্ষায় ধরা পড়ায় তা দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা। সে কথাই ছোট চা চাষিদের ডেকে বুঝিয়ে দু’দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হল জলপাইগুড়িতে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থা কীটনাশক দমনে একটি ‘মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন’ (অ্যাপ) তৈরি করেছে। সেটিও হাতেকলমে দেখানো হল ছোট চা চাষিদের।
‘মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন’টি চলবে মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তিতে। কোনও চা বাগানে গিয়ে ওই অ্যাপের সাহায্যে জানা যাবে, সেখানে কী ধরনের পোকা রয়েছে। সেগুলি দমন করতে কী কী পদ্ধতি নেওয়া যেতে পারে তাও জানাবে ওই অ্যাপটি। কোনও ক্ষতিকারক বা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার না করেই রোগপোকা দমন করা যাবে। চা চাষিদের সঙ্গে নিয়মিত মেসেজে যোগাযোগ রাখবে অ্যাপটি। দু’দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে কৃষি দফতরের জেলার আধিকারিকেরাও গিয়েছিলেন।
জেলা ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সূত্রের খবর, বাধ্যতামূলক ভাবে এই প্রশিক্ষণ সকলকে নিতে হবে। ছোট এবং ক্ষুদ্র চা বাগানের নিজস্ব কারখানা থাকে না। ছোট চা বাগানের পাতা বিক্রি করা হয় অন্য কারখানায়। সেখানেই তৈরি হয় চা। সাধারণত কোনও একটি ছোট চা বাগানের পাতা থেকে আলাদা করে চা তৈরি করে না কারখানাগুলি। বিভিন্ন চা বাগানের পাতা মিশিয়ে তৈরি হয় চা। তারফলে কোনও একটি বাগানের পাতায় কীটনাশক মাত্রাতিরিক্ত থাকলে গোটা চায়ে ছড়িয়ে যাবে। সে কারণেই প্রতিটি বাগানকে ধরে ধরে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বারবার বোঝাতে চেষ্টা করছি সকলকে কীটনাশকের যেন মাত্রিরিক্ত ব্যবহার না করা হয়, রাসায়নিক কীটনাশকও যেন ব্যবহার না করা হয়। চা পর্ষদ এবং কৃষি মন্ত্রকেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।”