গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
Gourbanga University

ক্যাম্পাসে আতঙ্ক, প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন এবং ক্যাম্পাসে ‘ক্লোজ়ড-সার্কিট ক্যামেরা’ থাকলেও, নেই বিজ্ঞান বা বাংলা বিষয়ের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভবনে।

Advertisement
অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪ ১০:০৬
রক্তাক্ত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন।

রক্তাক্ত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন। নিজস্ব চিত্র।

সাদা মার্বেলের মেঝেয় গড়াচ্ছে রক্ত। ছড়িয়ে রয়েছে ছাতা-জুতো। বৃহস্পতিবার দুপুরে এমনই ছবি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায়। অভিযোগ, বিজ্ঞান ভবনের নীচের তলায় স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় সিমেস্টারের অঙ্কের ছাত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তীর গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তনী অলোক মণ্ডল। দাবি, পরে ছুরি দিয়ে গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই যুবক। রক্তাক্ত দু’জনকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, শিক্ষকেরা। গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, আতঙ্কিত ছাত্রছাত্রীরা। প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।

Advertisement

সূত্রের দাবি, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন এবং ক্যাম্পাসে ‘ক্লোজ়ড-সার্কিট ক্যামেরা’ থাকলেও, নেই বিজ্ঞান বা বাংলা বিষয়ের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভবনে। পরিচয়পত্র ছাড়াই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনার অভিযোগও রয়েছে। এ দিন দুপুরের ঘটনার পরে নিরাপত্তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মালদহের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো উচিত। ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় পরিচয়পত্র দেখা উচিত।’’ বালুরঘাটের বাসিন্দা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় সিমেস্টারের ছাত্রী মাম্পি রায় বলেন, ‘‘রাস্তাঘাটে মেয়েদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তো ঘটেই চলেছে। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও হামলা হল। ভয় হচ্ছে।’’

নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পবিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্তই রয়েছে। তবু আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

এ দিনের ঘটনায় আক্রান্ত ছাত্রী তনুশ্রী পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ির বাসিন্দা। তাঁর বাবা অসমে চাকরি করতেন। পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরে ইংরেজবাজার শহরের মালঞ্চপল্লির বাসিন্দা অলোক উত্যক্ত করতেন তনুশ্রীকে। অলোক এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পদার্থবিদ্যা নিয়ে ২০২১ সালে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ। এ দিন হাসপাতালে আক্রান্ত ছাত্রীর মা বলেন, ‘‘মেয়েকে উত্যক্ত করত ছেলেটা। মেয়ে বলেছিল, সামলে নেবে। তবে ছেলেটা যে হামলা চালাবে, ভাবতে পারিনি!’’

ঘটনায় হতবাক অভিযুক্ত যুবকের পরিবারের লোকজনও। তাঁরা জানিয়েছেন, অলোককে বেশ কিছু দিন ধরে উদাসীন থাকতে দেখা গেলেও তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে কাউকে খুনের চেষ্টা করবেন, তা তাঁরা ভাবতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement