দিল্লি ডায়েরি। —ফাইল চিত্র।
মঞ্চ থেকে ১৮০ ফুট উঁচুতে রাম-লক্ষ্মণের রথ উড়তে উড়তে রাবণের রথের দিকে ধেয়ে যাবে। আকাশ থেকে রাবণের রথ উড়ে এসে আক্রমণ করবে দুই দশরথ-পুত্রকে। মঞ্চে আলো ছড়াবেন তারকা-অভিনেতারা। দিল্লিতে নবরাত্রি শুরু হলেই নানা মহল্লায় রামলীলা শুরু হয়ে যায়। সবচেয়ে বিখ্যাত লাল কেল্লার সামনের ময়দানে লব-কুশ রামলীলা। এ বার সেখানে কৃত্রিম মেধা কাজে লাগাতে চলেছেন আয়োজকরা। বলিউডের ও টিভির তারকারা তো প্রতি বছরই থাকেন। এ বার ওটিটি তারকাদের দেখার দাবি উঠেছিল। তাই তাঁরাও বাদ থাকছেন না। আর রাবণের সীতাহরণ ও জটায়ুর সঙ্গে রাবণের আকাশযুদ্ধের জন্যই ওই ১৮০ ফুট উঁচু ক্রেন নিয়ে আসা হয়েছে। আয়োজকরা বলছেন, তাঁরা নিমিত্তমাত্র। সবই প্রভু রামের লীলা।
শাহ বনাম যোগী
কে হবেন নরেন্দ্র মোদীর উত্তরসূরি? রাজনৈতিক মহলে এ এক স্বাদু বিতর্ক। চুলচেরা তুলনা চলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মধ্যে। কার রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক প্রভাব বেশি তার ফয়সালা এখনও হয়নি। তবে হরিয়ানা এবং জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সক্রিয়তায় অমিত শাহ শুধুমাত্র যোগীই নন, পিছনে ফেলে দিয়েছেন বিজেপির সব নেতা মন্ত্রীকেই। সামনে শুধুমাত্র মোদী। নির্বাচনী সভা করেছেন তিনি ঝড়ের গতিতে, মোদীর পরেই তাঁর জনসভার সংখ্যা। এক ডজনেরও বেশি জনসভা করেছেন শাহ। তার হিসাবও রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্প্রতি দলীয় সহকর্মীদের বলেছেন, রাজনৈতিক জীবনে এখনও পর্যন্ত নাকি ১১,৮০০ রাজনৈতিক জনসভা করেছেন তিনি! যোদী আদিত্যনাথ শুনতে পাচ্ছেন?
রেগে গেলেন মায়াবতী
ভোটব্যাঙ্ক ক্রমশই ক্ষীয়মাণ, কিন্তু দলিত নেত্রীর পরিচয় নিয়ে তাঁর লড়াই এখনও একই রকম চলছে। সম্প্রতি নিজেরই শরিক দলের (আইএনএলডি) এক নেতাকে এই নিয়ে ভৎর্সনা করতে দেখা গেল বিএসপি নেত্রী মায়াবতীকে। হরিয়ানার এক জনসভায় আসার কথা ছিল আইএনএলডি-র সাধারণ সম্পাদক অভয় সিংহ চৌটালার। হেলিকপ্টার বিভ্রাটের কারণে তিনি আসতে পারেননি। পাঠানো হয় অপর নেতা শের সিংহ বড়শামিকে। শের তাঁর বক্তৃতায় দলিতদের ‘হরিজন’ সম্বোধন করে বসেন। এর পরই মায়াবতী কিছুটা চড়া স্বরে বলেন, সংবিধানে ‘হরিজন’ বলে কোনও শব্দ নেই। তফসিলি জাতি ও জনজাতি হিসাবেই দলিতদের উল্লেখ করা হয়। ক্ষুব্ধ নেত্রী এ কথাও বলেন, শের সিংহ বড়শামির উচিত সংবিধান খুঁটিয়ে পড়া! এটাও মনে করিয়ে দেন, ১৯৭৭ সালে তিনি জনতা পার্টির এক নেতার এই একই ভুল শুধরে দিয়েছিলেন!
প্রশাসনে ক্রিস গেল?
যে দেশে ক্রিকেট বিনা গীত নাই, সে দেশের সঙ্গে ক্রিকেট স্পর্শরহিত কূটনীতি হয় কী করে! আর তাই সদ্য নয়াদিল্লি সফর শেষ করা জামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস-এর সঙ্গে বিশেষ অতিথি হিসাবে এলেন ক্রিকেট তারকা ক্রিস গেল। তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় সর্বত্র থাকলেন তিনি, রাজঘাটে চাঁপা গাছের চারা পুঁতলেন, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে উষ্ণ করমর্দন করলেন। সারনাথ ও বারাণসীতে গিয়ে ভারত দর্শন করলেন, গঙ্গাবক্ষে নৌবিহার করলেন। দেখা গেল বাইশ গজের বাইরেও সমান স্বচ্ছন্দ ক্রিস গেল। প্রশ্ন উঠল, আগামী দিনে তাঁকে প্রশাসনিক মঞ্চে দেখা যাবে কি না! ভারত সফরের মধ্যেই তিনি একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন মোদীকে ‘নমস্তে’ জানিয়ে। হ্যাশট্যাগে লিখেছেন ‘ওয়ান লাভ’, জামাইকার সংস্কৃতিতে যে শব্দবন্ধ ঐক্য, শান্তি এবং সম্প্রীতির সূচক।
সইতে পারেন না
মাস দেড়েক পরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেবেন ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। শেষ কয়েক দিনে তিনি আইনজীবীদের লাগামছাড়া আচরণ দেখলেই ধমকাচ্ছেন। আর জি কর মামলায় কলকাতার আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচি হইচই করে বকুনি খেয়েছেন। ওই মামলায় আরও দুই আইনজীবীকে চন্দ্রচূড় বলেছেন, কার যুক্তি বেশি গ্রহণযোগ্য তার বিচার গলার জোরে হবে না। এক আইনজীবী অন্য আইনজীবীর কথার মাঝে কথা বলায় চন্দ্রচূড় বলেছেন, “এটা পাড়ার মুদির দোকান নয় যে গিয়েই ‘ভাইয়া লজেন্স দাও’ বলে হইচই করবেন!”