—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যের শাসক দলের জেলা ভিত্তিক সংগঠন স্তরের রদবদল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, দলের বিভিন্ন বিষয়ে তিনিই শেষ কথা বলবেন। এতে সংগঠনের রদবদল নিয়ে দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে, কারা নতুন করে দায়িত্বে আসতে চলেছেন তা নিয়ে আলোচনা চলছেই। এর মধ্যে দলের তরফে জেলা ধরে নতুন করে খোঁজখবর, সমীক্ষা করানো হয়েছে। আপাতত কলকাতায় তালিকা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। নেত্রীর অনুমোদনের পরে যে কোনও সময় তা ঘোষণা করা হতে পারে।
দলের রাজ্য স্তরের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘জেলাওয়ারি নামের তালিকা ছিল। একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখনও চলছে। তার মধ্যে দলীয় ভাবে একটা নতুন সমীক্ষা এবং রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তা দেখে নিই সব চূড়ান্ত হচ্ছে।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের মধ্যে লোকসভা ভোটের পরেই নবীন প্রবীণ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। নবীনদের হাতে দলের বেশি দায়িত্ব থাকবে তা প্রবীণেও সমান মর্যাদা পাবেন, তা নিয়ে দ্বিধা দেখা দিচ্ছিল। বিশেষ করে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী বা সমর্থকদের বড় অংশ দলের বিভিন্ন দায়িত্ব পাবেন বলে একাংশ প্রচার করেন। তেমনই, আর একদল আস্থা রাখছিলেন নেত্রীর উপরে। শেষ অবধি, জাতীয় কর্মসমিতির নানা সিদ্ধান্ত এবং নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির তালিকা দেখেই পরিষ্কার হয়, নেত্রীর ‘কাছে’র বলে পরিচিত প্রবীণেরা গুরুত্ব পাচ্ছেন। নেত্রীর প্রবীণ নবীনের সমন্বয়ে চলার বার্তা দেন।
এতে জেলা সংগঠনে বদলের যে বার্তা অভিষেকের তরফে দেওয়া হয়েছিল তা নেত্রীর অনুমোদনে ছাড়পত্র পাবে তা পরিষ্কার। দলের উত্তরবঙ্গের কয়েকজন নেতা জানান, প্রথমে বিশেষ করে, দলের ভোট-সহ প্রচারের বিভিন্ন কাজের থাকা সংস্থার মতামতের পরে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। তাতে অভিষেক-সহ দলের অনেক নেতারই মতামত ছিল বলেই ধরে নেওয়া যায়। পরে সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে নতুন করে তালিকা সংশোধন হয়। এই বিষয়টির নিস্পত্তি করতে তাই রদবদলের আগে নতুন করে উত্তরবঙ্গ জুড়ে সমীক্ষা হয়েছে। দক্ষিণেও একই কাজ হচ্ছে। নিজস্ব সংস্থা, নেতাদের একাংশ ছাড়াও দলের নেটওয়ার্ক ধরে এই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, দার্জিলিং জেলার সমতল, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর বা দক্ষিণ দিনাজপুর বা মালদহের নাম রয়েছে। কোথাও সার্বিক জেলা কমিটি, কোনও জেলায় সভাপতি থেকে চেয়ারম্যান, কোথাও শ্রমিক সংগঠন, কোথাও ছাত্র বা মহিলা সংগঠনের রদবদল হতে পারে। লোকসভা এবং উপ নির্বাচনের ফলাফলে উত্তরবঙ্গে কোচবিহারে বদলের সম্ভাবনা সবচেয়ে কম। বেশ কয়েকজন জেলার দায়িত্বে থাকা নেতানেত্রীদের নিয়ে রিপোর্ট গিয়েছে নেত্রীর কাছে। তাতে সাংগঠনিক দক্ষতা, জনপ্রিয়তার সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনযাত্রা, কাজকর্ম, পেশা বা কিছু অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখান থেকে ২০২৬ সালের আগে পুরনো নেতৃত্বের একাংশের উপর আবার নেত্রী ভরসা করতে পারেন বলে সূত্রের খবর।