murder case

রায়গঞ্জের বধূহত্যা: ‘বিশেষ পরিচিত’ খুনিকে শনাক্ত করলেও এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ

সুপ্রিয়ার দেহ গলা কাটা অবস্থায় বিছানায় ছিল। তা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থাতেই সুপ্রিয়াকে খুন করা হয়েছে। খুনের সময় সুপ্রিয়ার পরনে ছিল নাইটি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৫৬
নিহত সুপ্রিয়া দত্ত।

নিহত সুপ্রিয়া দত্ত। — ফাইল চিত্র।

শোয়ার ঘরে নাইটি পরা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে বধূর দেহ। খুনি বিশেষ পরিচিত বলেই কি তাঁর সামনে আটপৌরে অবস্থায় ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বধূ? শুক্রবার বিকেলে রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লি এলাকায় সুপ্রিয়া দত্ত (৪১) হত্যাকাণ্ডে এমনই সন্দেহ পুলিশের। ঘটনাস্থল পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখার পর তদন্তকারীদের ধারণা, খুনি সুপ্রিয়ার বিশেষ পরিচিত। তা না হলে ফাঁকা বাড়িতে নাইটি পরা অবস্থায় এক আগন্তুকের সামনে শোয়ার ঘরে থাকতেন না তিনি। পাশাপাশি তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জোর করে যদি আততায়ী বাড়িতে ঢুকে পড়ে, তা হলে সুপ্রিয়ার পোশাক বদল করার সময় পাওয়ার কথা নয়। তবে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে যে, তাঁরা চিহ্নিত করতে পেরেছেন আততায়ীকে। আরও জানা গিয়েছে, হত্যাকারীর খোঁজে এখন পুলিশের একটি দল রায়গঞ্জের বাইরে।

সুপ্রিয়ার দেহ গলা কাটা অবস্থায় শোয়ার ঘরের বিছানায় ছিল। রক্তে ভেজা বিছানা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থাতেই সুপ্রিয়াকে খুন করা হয়েছে। খুনের সময় সুপ্রিয়ার পরনে ছিল নাইটি। তা দেখে, তদন্তকারী দল মনে করছে, কোনও অচেনা ব্যক্তির সামনে ৪১ বছরের বধূ নাইটি পরে শোয়ার ঘরে থাকতে অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা স্বাভাবিক। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। আর তাই মনে করা হচ্ছে, পরিচিতের হাতে খুন হয়েছেন সুপ্রিয়া। সুপ্রিয়ার জীবনযাত্রা সম্পর্কেও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। কারা বাড়িতে যাতায়াত করত তা-ও দেখা হচ্ছে খতিয়ে।

Advertisement

পুলিশের হাতে এসেছে আরও সূত্র। সুপ্রিয়ার বাড়ির কাছে একটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তার ফুটেজ। তা দেখে এক আগন্তুকের গতিবিধি ধরা পড়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপ্রিয়ার প্রতিবেশীর বাড়ির কাছে যে সিসি ক্যামেরা রয়েছে তার ফুটেজের সময় এবং ওই রাস্তার অন্যত্র যে সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে তার সময় মিলিয়ে দেখে তদন্তকারীরা প্রায় নিশ্চিত আততায়ী কে। পাশাপাশি, পুলিশ কুকুরও আততায়ীর গতিবিধি চিহ্নিত করেছে বলে জানা গিয়েছে তদন্তকারীদের সূত্রে।

সন্দেহ ঘনাচ্ছে আরও কয়েকটি বিষয়ে। সুপ্রিয়ার মৃত্যুর পর বাড়ি থেকে টাকাপয়সা, গয়না বা দামি জিনিসপত্র খোয়া যায়নি। তবে সন্ধান মিলছে না দু’টি মোবাইলের। এর একটি সুপ্রিয়ার এবং অপরটি তাঁর ছেলের। তদন্তকারীরা মনে করছে, খুন করার পর কোনটা সুপ্রিয়া দেবীর মোবাইল তা বুঝে উঠতে পারেনি আততায়ী। তাই দু'টি মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় সে। তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, সুপ্রিয়ার মোবাইলের কল লিস্ট, চ্যাট হিস্ট্রি অথবা কোনও ছবি আততায়ীকে চিহ্নিত করে দিতে পারে। সেই কারণেই মোবাইল হাতায় আততায়ী।

শুক্রবার বিকেলে নিজের ঘরে খুন হন সুপ্রিয়া। ঘটনার পর এখনও থমথমে এলাকা। আতঙ্কের ছাপ এলাকাবাসীর চোখেমুখে। বুবলি দত্ত নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে সুপ্রিয়াকে দেখেছিলাম। সন্ধ্যায় চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি, ও খুন হয়েছেন। এমন ঘটনায় আমরাও আতঙ্কে। আমাদেরও বাড়িতে ওই সময় একা একা থাকতে হয়। ভয় হচ্ছে কখন যে কী ঘটে যাবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement