নদী ঘিরে প্রশাসনের এমন উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরাও। —প্রতীকী চিত্র।
জলপাইগুড়ির করলা নদীর দূষণ ঠেকাতে বৈঠকের পরে দুই সপ্তাহ কেটে গেলেও অভিযোগ বৈঠকের কার্যবিবরণী এখনও তৈরি করতে পারেনি পুরসভা। কার্যবিবরণী যায়নি রাজ্যের পুর ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরে। বিরোধীরা বলছেন, বৈঠকের পর এক চুলও এগোল না করলা দূষণ মুক্ত করার প্রক্রিয়া। একদিকে দূষণ, অন্য দিকে, জল কম থাকায় শীতকালে করলা নদী মজে যেতে বসেছে। এই নদী ঘিরে প্রশাসনের এমন উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরাও।
নদীর একদিকে পরিযায়ী পাখি সাঁতার কাঁটছে, পানকৌড়ি উড়ে এসে ছোঁ মেরে মাছ নিয়ে যাচ্ছে, জলে নেমে কুকুরও মাছ খুঁজছে। জলপাইগুড়ি শহরকে দু’ভাগে ভাগ করা করলা নদীর জল এখন তলানিতে। যে টুকু জল রয়েছে, সেটিও মাছ ধরার বেঁড়া থেকে শুরু করে আবর্জনায় বইতে বাধা পাচ্ছে। নদীর বদ্ধ জলের উপরে শ্যাওলার আস্তরণ পড়েছে। জলপাইগুড়ির প্রকৃতি প্রেমী সংগঠনের আহ্বায়ক দীপাঞ্জন বক্সি বলেন, “যখন আমরা চাপ দেই, নদী নিয়ে উদ্যোগ হয়। এখন নদীর জলে থার্মোকল ভাসছে, নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে রয়েছে। যাদের উপরে সরকারি দায়িত্ব, তাঁরা কী দেখছেন না?”
সম্প্রতি রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, করলা নদীর দূষণ ঠেকাতে তৈরি হবে নতুন পরিকাঠামো। নদীতে সরাসরি নর্দমার ময়লা জল পড়বে না। নর্দমার জল কৃত্রিম খালে ফেলে পরিশোধন করে নদীতে ফেলা হবে। কোটি-কোটি টাকার এই প্রকল্প নিয়ে বৈঠকের পরে দু’সপ্তাহ কাটতে চলল, এখনও পুরসভা থেকে বৈঠকের প্রতিলিপি পাঠানো হয়নি পুর ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরে। গত ১০ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি পুরসভার সভাঘরে করলা নদী নিয়ে ওই উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হয়েছিল। পুরসভা সূত্রের দাবি, পরিকাঠামোগত টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রস্তুত হলেওপুরসভা কার্যবিবরণী না পাঠানোয় কাজ থমকে রয়েছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার পুর প্রধান পাপিয়া পাল বলেন, “আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” প্রশ্ন উঠছে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের কার্যবিবরণী তৈরি করতে কতদিন সময় লাগতে পারে? পুরসভার অভিজ্ঞকর্মীদের দাবি, খুব বেশি হলে ৪-৫ দিন। পুরসভার এক কর্মীর কথায়, “যদি জোর দেওয়া হয় কয়েক ঘণ্টায় কার্য বিবরণী তৈরি করা যায়। তবে যদি সদ্দিচ্ছা না থাকে, তাহলে এক বছরও লাগতে পারে।” কী ভাবে কাজ হবে তার পুরো পরিকল্পনাও তৈরি বলে খবর। পুর ইঞ্জিনিয়াররিং দফতরের মুখ্য বাস্তুকার চিত্তরঞ্জন বর্মণ বলেন, “আলোচনা হয়েছে। কাজের প্রস্তুতি চলছে।”