Medicine Supply Crisis

রাতের শহরে ‘অমিল’ ওষুধ, কবে যাবে ভয়

উত্তরবঙ্গের যে শহরই হোক না কেন, রাতে ওষুধের জরুরি প্রয়োজনে হন্যে হয়ে ঘুরলেও দোকান খোলা মেলে না।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:৩৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

শিলিগুড়ির নয়াবাজারের বাসিন্দা শ্বাসকষ্টের রোগী স্বপন চক্রবর্তীকে বুধবার রাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পরে চিকিৎসক ওষুধ লিখে দেন। হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের দোকান তা রাখে না জেনে চিন্তায় পড়ে রোগীর পরিবার। রাত তখন সাড়ে ১০টা। শেষে দোকান বন্ধ করার পথে এক দোকানিকে অনেক অনুরোধের পরে, ওষুধ কিনে হাঁফ ছাড়ে পরিবারটি।

Advertisement

রাত-বিরেতে রোগীদের ওষুধ কিনতে কী ভাবে হেনস্থা হতে হয় তা ভুক্তভোগীরাই জনেন। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট— উত্তরবঙ্গের যে শহরই হোক না কেন, রাতে ওষুধের জরুরি প্রয়োজনে হন্যে হয়ে ঘুরলেও দোকান খোলা মেলে না। বাড়িতে রোগীকে দেওয়ার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার পেতে আরও সমস্যা। তবে, মালদহ শহরে রাতে কিছু ওষুধ দোকান খোলা থাকে। বেঙ্গল কেমিস্টস অ্য়ান্ড ড্রাগিস্টস অ্য়াসোসিয়েশনের (বিসিডিএ) মালদহ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত সুকুলের দাবি, নিরাপত্তা দিলে ইংরেজবাজারে এলাকা ধরে একটি ওষুধের দোকান খোলা রাখতে পারবেন তাঁরা।

মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল বা আরও দুই একটি সরকারি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকলেও অনেক ওষুধ মেলে না বলে অভিযোগ। হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনেক সময় রোগীর প্রয়োজন মতো কিছু ওষুধ দেন যা বাইরে থেকে কেনা ছাড়া উপায় থাকে না। রাত-বিরেতে দোকান খোলা না থাকায় বিপাকে পড়েন রোগীর পরিজনেরা।

জলপাইগুড়ির (সদর) মহকুমাশাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক করেন। জলপাইগুড়িতে বিসিডিএ-র তরফে আশ্বাস, শীঘ্রই রাত্রিকালীন পরিষেবা চালু হচ্ছে। ওষুধ ব্যবসায়ীদের দাবি, মাদকাসক্তেরা দোকানে এসে ঝামেলা করে, ভাঙচুর করে। পুলিশি নিরাপত্তা না পেলে রাতে দোকান খোলা রাখা মুশকিল।

কোচবিহারের একটি সামাজিক সংগঠনে যুক্ত সুমন্ত সাহা বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় কিছু পয়েন্ট করে ওষুধের দোকান খোলা থাকলে ভাল।’’ যদিও কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাতে ওষুধ বা অন্য কোনও সমস্যা নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।’’ বালুরঘাট এবং হিলিতে জরুরি অবস্থায় ফোন করে দোকান মালিকদের বাড়ি থেকে ওষুধ সংগ্রহ করতে দু’টি করে দোকানের নম্বর প্রশাসনের কাছে দেওয়া আছে বলে জানান বিসিডিএ’র জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল। দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে বিসিডিএ’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করব।’’ অক্সিজেন সিলিন্ডারের বেসরকারি একটি দোকান বালুরঘাটে রয়েছে। তবে রাতে খোলা থাকে না।

সরকারি উদ্যোগে রাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের পরিষেবাও রায়গঞ্জে বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ। কেউ জানালে রাতে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ ও ইসলামপুরে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

Advertisement
আরও পড়ুন