প্রতীকী ছবি।
ফের পরকীয়া সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগ ধূপগুড়িতে। এই নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় বার। অভিযোগ, বিবাহিতার সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহে এক যুবকের উপর চড়াও হয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন ধূপগুড়ির বাসিন্দারা। এমনকি, ধারালো অস্ত্রের কোপও মারা হয়। এই ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। তিন দিনের মধ্যে দু’বার গণপিটুনির ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন জেলার বাম নেতৃত্ব। তবে গণপিটুনিতে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল।
স্থানীয়দের দাবি, শিলিগুড়ির বাসিন্দা বিশাখা মালোদাসের সঙ্গে মেখলিগঞ্জের শ্যামল হালদারের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি বিশাখা ধূপগুড়ির ভেমটিয়া এলাকায় তাঁর বাপের বাড়িতে আসেন।
অভিযোগ, শ্যামলকে ফোন করে ভেমটিয়ায় তাঁর বাপের বাড়িতে আসতে বলেন বিশাখা। বুধবার সকালে শ্যামল ওই বাড়িতে ঢুকতেই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন সকলে। তাঁকে বেঁধে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় তাঁর। এমনকি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্যামলকে কোপানোও হয়। এর পর শ্যামলের মোবাইলও ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে শ্যামলকে উদ্ধার করে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। তাঁকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ধূপগুড়ি হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে জলপাইগুড়ির হাসপাতালে ভর্তি করানো করা হয়।
শ্যামলের দাবি, ‘‘বিশাখার সঙ্গে আমার সম্পর্ক রয়েছে। সে-ই ফোন করে বাড়িতে আসতে বলেছিল। বুধবার ওর বা়ড়ি ঢুকতেই বিশাখার স্বামী, বাবা মিলে ইট-পাথর, কাঠ দিয়ে আমাকে মারধর করে। ছুরি নিয়ে আঘাতও করে।’’ যদিও এ দাবি অস্বীকার করে বিশাখার পাল্টা দাবি, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলে আমার দুই বাচ্চাকে মেরে ফেলবে বলে শ্যামল হুমকি দিয়েছে।’’ শ্যামলকে ডেকে আনার কথা অবশ্য স্বীকার করেছেন বিশাখার স্বামী রাজকুমার বর্মণ। তিনি বলেন, ‘‘আমিই বিশাখাকে ফোন করে ওকে ডেকে আনতে বলেছিলাম।’’
এই ঘটনায় জড়িত তিন অভিযুক্তকে আটক করলেও জেলা সিপিএমের সমালোচনার মুখে পড়েছে পুলিশ-প্রশাসন। ধূপগুড়ির সিপিএম নেতা জয়ন্ত মজুমদারের দাবি, ‘‘ধূপগুড়ি ব্লকে ৪৮ ঘণ্টায় দু’টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন মানুষ। তাই বারবার নিজেদের হাতে আইন তুলে নিচ্ছেন।’’ যদিও তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক রাজেশকুমার সিংহের বক্তব্য, ‘‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’