(বাঁ দিকে) লক্ষ্মী। (ডান দিকে) উর্মিলা। —ফাইল চিত্র।
বেঙ্গল সাফারি পার্কে শোকের ছায়া। সঙ্গী উর্মিলাকে একা রেখে চলে গেল তার বহু বছরের সঙ্গী লক্ষ্মী। কুনকি হাতিটির মৃত্যুতে শোকাহত বেঙ্গল সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শুক্রবার রাতে ৬৮ বছর বয়সে বেঙ্গল সাফারি পার্কে মৃত্যু হয়েছে লক্ষ্মীর। সাফারি কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে।
২০০৯ সালে উত্তরপ্রদেশের শোনপুর থেকে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল লক্ষ্মীকে। কিছু দিন জলদাপাড়ার জঙ্গলে একাই কাটিয়েছে সে। জলদাপাড়ায় আসা পর্যটকদের সাফারির জন্য যেমন পিঠ এলিয়ে দিয়েছে লক্ষ্মী, তেমনই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তল্লাশি অভিযান এবং একাধিক দুঃসাহসিক অপারেশনে কুনকি হাতিটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। পরে জলদাপাড়ায় ‘বান্ধবী’ পায় লক্ষ্মী। আনা হয় উর্মিলা নামে আর একটি কুনকি হাতিকে। ২০১৬ সালে বেঙ্গল সাফারি পার্ক তৈরি হলে শিলিগুড়ির অনতিদূরে ওই অভয়ারণ্যে নিয়ে আসা হয় লক্ষ্মী-উর্মিলাকে। বস্তুত, ওই দু’জনকে দিয়েই বেঙ্গল সাফারি পার্কে হাতি সাফারির সূচনা হয়। তার পর সাফারি পার্কের একাধিক অভিযানে শামিল করা হয় লক্ষ্মীকে। ২০১৯ সালে বেঙ্গল সাফারি পার্ক থেকে একটি চিতাবাঘ এনক্লোজ়ার থেকে হারিয়ে যায়। সেই সময়ে সার্চ অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল সে।
হঠাৎ ওই কুনকি হাতিটির মৃত্যু হওয়ায় শোকপ্রকাশ করেছে বন দফতর। শনিবার রাজ্য জ়ু অথরিটির সচিব সৌরভ চৌধুরী বলেন, ‘‘বার্ধক্যজনিত কারণেই লক্ষ্মীর মৃত্যু হয়েছে। তবে ওর হজমের সমস্যা ছিল। গ্যাস্ট্রিক থেকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেল ও। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর কারণ জানা হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বন দফতরের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে লক্ষ্মী। জীবনের একটা বড় সময় ও জলদাপাড়ায় কাটিয়েছিল। অনেক অভিযানের অংশীদার।’’ বেঙ্গল সাফারি পার্কের ডিরেক্টর বিজয় কুমার জানান, নামের মতো কাজেও লক্ষ্মী ছিল কুনকি হাতিটি। তিনি বলেন, ‘‘খুবই শান্ত স্বভাবের হাতি ছিল লক্ষ্মী। মায়া ছিল ওর মধ্যে। ওর মৃত্যুতে আমরা সকলে দুঃখিত।’’ তবে লক্ষ্মীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য শনিবারই বেঙ্গল সাফারি পার্কে ময়নাতদন্ত হচ্ছে।