—প্রতীকী চিত্র।
শনিবার সকাল। শীতের ভোরে তখনও অনেকেরই ঘুম ভাঙেনি। তারই মধ্যে যা ঘটে গিয়েছে, তা খানিক পরে টের পেলেন সীমান্তের কাছাকাছি এলাকা কীচকটোলার মানুষজন।
শুক্রবার রাত থেকেই এলাকায় ঘন ঘন পুলিশের গাড়ি যাতায়াত করেছে। পুলিশকর্মীরা টহল দিয়েছেন। ছিলেন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরাও। অদূরে বাংলাদেশ সীমান্ত থাকায় পাচার রুখতে মাঝেমধ্যেই পুলিশি তৎপরতা দেখা যায় বলে বাসিন্দাদের আলাদা ভাবে কিছু মনে হয়নি। কিন্তু শনিবার সকালে পুলিশের গুলিতে সাজ্জাক আলমের (২৫) মৃত্যুর ঘটনা জানার পরে আগের রাতে পুলিশের তৎপরতার কারণ পরিষ্কার হয়ে যায়।
ঘটনাস্থল উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর থানার সাহাপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কীচকটোলা সেতু এলাকা। গত বুধবার সাজ্জাক পাঞ্জিপাড়ার ইকরচালায় দুই পুলিশকর্মীকে গুলিতে জখম করে পালিয়ে যায়। করণদিঘির পোলট্রি ব্যবসায়ী সুবেশ দাসকে খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি ছিল করণদিঘির ছোট সোহারের সাজ্জাক। এ দিন পুলিশের ‘এনকাউন্টারে’ মারা যায় সে।
গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘সাজ্জাক ফিল্মি কায়দায় পুলিশকে গুলি চালিয়েছিল। পুলিশও ফিল্মি কায়দায় সাজ্জাককে ‘এনকাউন্টার’ করেছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এটাই বলেছিলেন।’’ এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে জানান, পুলিশকর্মীরা লুঙ্গি-সোয়েটার পরে, গায়ে চাদর জড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছিলেন। কয়েক জন পুলিশকর্মী ছেঁড়া পোশাকও পরেছিলেন।
এ দিন স্থানীয় বাসিন্দা তৈয়ব আলম বলেন, ‘‘সিনেমায় পুলিশ আর দুষ্কৃতীর গুলিযুদ্ধ দেখেছি। এ বার আমাদের গ্রামেই ঘটল।’’ সাহাপুরের বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘‘গোয়ালপোখরে আগে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য ছিল না। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।’’
কুয়াশায় ঢাকা ভোরে সাজ্জাককে ধরতে এ দিন সৈরানি নদীর কীচকটোলা সেতু ও সংলগ্ন এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। সাজ্জাক পালানোর সময় পুলিশ সেতুর উপর থেকে গুলি করে বলে সূত্রের দাবি। সেতুর নীচে লুটিয়ে পড়ে সাজ্জাক।