অভিযুক্ত তনুজা মণ্ডলকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
বার বার বিরক্ত করছিল আট বছরের ছেলে। তাতেই রেগে গিয়ে তার গলায় ওড়না জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বলে স্বীকার করলেন মা! নরেন্দ্রপুর থানার খেয়াদহের মৌলিহাটি এলাকায় শনিবার এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থানায় আত্মসমর্পণ করেন তনুজা মণ্ডল নামে ওই মহিলা। রাগের মাথায় আট বছরের ছেলেকে খুন করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন তিনি। রবিবার সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয় তাঁকে। সেই সময় সংবাদমাধ্যমের সামনেও খুনের কথা স্বীকার করে নেন তনুজা। রবিবার আদালতে হাজির করানো হবে তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবারই মৃত শিশুটির দেহের ময়নাতদন্তও করা হবে।
তনুজার স্বামী প্রসেনজিৎ মণ্ডল মাছের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের দুই পুত্রসন্তান। বছর দু’য়েক আগে দেড় বছরের ছোট ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, তাকেও খুন করেছিলেন তনুজা। বড় ছেলে দেবজিৎ মণ্ডল স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। শনিবার সকালে ব্যবসার কাজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান প্রসেনজিৎ। বাড়িতে মায়ের সঙ্গে ছিল ওই শিশু। অভিযোগ, সে সময় ছেলেকে খুন করেন মা। খুনের পর ছেলের দেহ বাড়িতে রেখে থানায় চলে যান তিনি। প্রথনে সোনারপুর থানায় যান। সেখান থেকে তাঁকে নরেন্দ্রপুর থানায় পাঠানো হয়। সেখানেই আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
এ দিকে তনুজা বেরিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পর দেবজিৎ ওরফে গোপালকে খুঁজতে বাড়িতে আসেন তার ঠাকুমা। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে বড় ছেলে তাপসকে ডাকেন বৃদ্ধা। তাপস এসে ঘরে ঢুকে দেখেন খাটের উপর পড়ে রয়েছে শিশুর দেহ। তার গলায় ওড়নার ফাঁস। খবর পেয়ে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁরা জানান, খাটের উপর কম্বল চাপা দেওয়া অবস্থায় শোওয়ানো ছিল দেহটি।
আত্মসমর্পণের পরে তনুজাকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান পুলিশকর্মীরা। দেহ উদ্ধার করেন তাঁরা। পুলিশের সামনেই তনুজাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের হাত থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে মারধরের চেষ্টা করা হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ লাঠি চালিয়ে সামাল দেয়।