কোচবিহারের তল্লিগুড়িতে অস্ত্র প্রশিক্ষণে বিএসএফ জওয়ানরা। সংগৃহীত চিত্র।
দিন কয়েক ধরেই উত্তপ্ত সীমান্ত। কোথাও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। কোথাও আবার ভারতীয় গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গেও বচসায় জড়িয়েছেন বিজিবি। আবার দুষ্কৃতীদের সঙ্গে লড়াইয়ে গুলিও চালাতে হয়েছে বিএসএফকে। এমন অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই অস্ত্রপরিচালনায় পারদর্শী কোন জওয়ানরা, তা বাছাই করতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। সোমবার থেকে কোচবিহারের তল্লিগুড়িতে বিএসএফের গোপালপুর রেঞ্জ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর দক্ষতা প্রমাণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। একাধিক রাইফেল, লাইট মেশিন গান, পিস্তল নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন বিএসএফ জওয়ানেরা। তিন দিন ধরে ওই প্রতিযোগিতা চলবে।
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্ৰত্যেক বছর জানুয়ারি মাসে আমরা এই ধরনের অস্ত্র চালানোর পারদর্শিতা বাছাই করতে প্রতিযোগিতার আসর করে থাকি। সেখানে প্রায় তিনশো জওয়ান অংশ নিয়েছেন। যারা বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র চালানোর প্রতিযোগিতায় সামিল হবেন।’’
সীমান্তরক্ষী বাহিনী সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে সব থেকে বড় সীমান্ত রয়েছে ভারতের। সব মিলিয়ে প্রায় ৫৪৯ কিলোমিটার সীমান্ত। এই দীর্ঘ সীমান্তে পাহারায় রয়েছে বিএসএফ। যার মধ্যে বেশির ভাগ অংশ রয়েছে গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের দায়িত্বে। বাকি অংশ বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার দেখাশোনা করে। ওই অংশের বেশ কিছু জায়গায় এখনও কাঁটাতার নেই। যার মধ্যে কিছুটা রয়েছে নদীপথ। দিনহাটার নাজিরহাট, গীতালদহ থেকে সিতাই, শীতলখুচি বা মেখলিগঞ্জের ওই অংশ জুড়ে চোরাকারবারীদের দাপটের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমনকি যে অংশে কাঁটাতার রয়েছে সেখানেও দুষ্কৃতীরা অপরাধমূলক কাজ করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সীমান্তপথে অনুপ্রবেশ ও চোরাচালানের আশঙ্কা বেড়ে যায়। বাংলাদেশে জঙ্গি তালিকাভুক্ত অপরাধীদের জেলমুক্তি হওয়ায় তাদের গতিবিধি বেড়ে যায়। বাংলাদেশের একাধিক জঙ্গি সংগঠন নতুন করে ভারতে অপরাধমূলক কাজের চেষ্টা করে। দিন কয়েক আগেই অসম পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স একাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। শুধু তাই নয়, একাধিক জায়গায় বিজিবির সঙ্গেও তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। বিজিবিকে সীমান্ত পারে মাটি খুঁড়ে ‘পজ়িসন’ নিতে দেখা গিয়েছে। সব নিয়েই সতর্ক বিএসএফ।
স্বাভাবিক ভাবেই, সীমান্তে মোতায়েন জওয়ানদের সব দিক থেকে যাতে পারদর্শী করা যায়, সে দিকেই নজর দিয়েছে বিএসএফ। সে দিক থেকে এই অস্ত্র প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।