কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখন্ডে থাকা গোঁসাইপাড়া গ্রামে বিএসএফের উপস্থিতিতে খড়ের গাঁদায় আগুন নেভাতে ব্যস্ত স্থানীয়রা। ছবি: তাপস পাল
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে ঘন-ঘন তেতে উঠছে পরিস্থিতি। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সজাগ নজরে সিঁটিয়ে সীমান্ত-গ্রামগুলি। এরই মাঝে একেবারে অন্য ছবি দেখা গেল কাঁটাতারের ও পারে থাকা ভারতীয় গ্রাম মাথাভাঙার গোঁসাইপাড়ায়।
সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে গোঁসাইপাড়া গ্রামের ভবেশ বসুনিয়া ও বানাই বসুনিয়ার বাড়ির সামনে থাকা খড়ের গাদায় আগুন লেগে যায়। সেই আগুন নেভাতে ছুটে আসেন পড়শি দেশের শ’দুয়েক বাংলাদেশি গ্রামবাসী। খবর দেওয়া হয় মাথাভাঙা দমকল কেন্দ্রে। কিন্তু বিএসএফের গেট পেরিয়ে গ্রামের মাটির গোঁসাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গরেন বসুনিয়া বলেন, “ওরা পড়শি দেশের বাসিন্দা হলেও, আমাদের প্রতিবেশী। বহুদিন ধরে আমরা মিলেমিশে থাকছি। বিপদে-আপদে একে অপরের পাশে দাঁড়াই।”
মাথাভাঙা ১ ব্লকের শিকারপুর পঞ্চায়েতের সাতগ্রাম মানাবাড়ি বুথে ওই গোঁসাইপাড়া গ্রাম। গ্রামের পরেই রয়েছে বাংলাদেশের জোংরা ইউনিয়নের গুরুপাড়া, ধবলগুড়ি গ্রাম। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ধরলা নদী। দুই গ্রামের মধ্যে দেশের সীমানা বোঝানোর জন্য রয়েছে কেবল পিলার। এ দিন আগুন লাগার খবর পেয়ে ওই গ্রামগুলি থেকেই ছুটে আসেন বাসিন্দারা। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রামে ঢোকার জন্য কংক্রিটের রাস্তা তৈরির কথা হলেও, আন্তর্জাতিক নিয়মের বেড়াজালে সেই কাজ ঝুলে রয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানানো হলেও দীর্ঘদিনের এই সমস্যার সুরাহা হয়নি বলেই দাবি। পঞ্চায়েত সদস্য পূর্ণচন্দ্র ডাকুয়া বলেন, ‘‘শুধু দমকলের ইঞ্জিন নয়, গ্রামের রাস্তায় ঢুকতে পারে না অ্যাম্বুল্যান্সও। খুব সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। পড়শি দেশের বাসিন্দাদের সাহায্যে এ যাত্রা বিপদ এড়ানো গেলেও, আমরা চাই গ্রামে দ্রুত রাস্তা তৈরি হোক। মাথাভাঙা ১ ব্লকের বিডিও শুভজিৎ মন্ডল জানান, ওই গ্রামের রাস্তার সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।
এ দিকে, শনিবারের পর নতুন করে গোপালপুর পঞ্চায়েতের বুড়াবুড়ি এলাকায় অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। সোমবার এলাকা পরিদর্শনে যান মাথাভাঙা থানার আইসি হেমন্ত শর্মা-সহ পুলিশের দল। মঙ্গলবার বিএসএফের তরফে গ্রামবাসীদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।