Babul Supriyo

নিজের গ্রামে সভা করিয়েই ছাড়লেন তৃণমূল কর্মী, ‘বাধ্য’ বাবুলের প্রশ্ন, ‘আমি কোন দলের মন্ত্রী?’

বাবুলের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন এক তৃণমূল কর্মী। মন্ত্রী কারণ জানতে চান। একটু তর্কাতর্কিও হয়। কিন্তু ওই কর্মী নাছোড়। সভা না করে যাওয়া চলবে না। সভা করেই ফিরতে হল মন্ত্রীকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মেখলিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ১২:১০
Babul Supriyo with TMC worker

তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে মঞ্চে বাবুল সুপ্রিয়। —নিজস্ব চিত্র।

মন্ত্রী বাবুলের ‘না’-কে ‘হ্যাঁ’ করিয়ে ছাড়লেন তৃণমূলের এক কর্মী। সভা না-করে কেন তিনি চলে যাচ্ছেন? গাড়ি আটকে প্রশ্ন তোলার পর, শেষমেশ সভা করেই ফিরতে হল বাবুলকে। মেখলিগঞ্জের ওই সভামঞ্চে বিক্ষোভকারীকে ডেকেও নিলেন তিনি।

শনিবার তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে ব্লকের জামালদহে সভা করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি এবং পর্যটন দফতরের মন্ত্রী বাবুল। প্রথমে আশ্রমপাড়ার সৎসঙ্গ বিহারে এবং পরে হাসপাতাল পাড়ার লোকনাথ মন্দির দর্শন করেন তিনি। তার পর জামালদহ মসজিদ পাড়ায় তৃণমূল প্রার্থী গোপাল চন্দ্র রায়ের সমর্থনে সভা করেন। মধ্যাহ্নভোজের জন্য এক বার চ্যাংরাবান্দা গিয়েছিলেন। সেখান থেকে আবার জামালদহের ক্লাব এবং পাঠাগারে দলীয় প্রার্থী সুবীর দাস ও পারমিতা মিত্র বিশ্বাসের সমর্থনে সভা করতে আবেদন করা হয়েছিল মন্ত্রীকে। কিন্তু কোনও কারণে তিনি ওই সভাটি করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে খবর। সভাস্থলের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় মন্ত্রীর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন এক তৃণমূল কর্মী। বাবুল গাড়ির জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে কারণ জানতে চান। একটু তর্কাতর্কিও হয়। কিন্তু ওই কর্মী নাছোড়। প্রশ্ন করেন, কেন সভা না করে চলে যাচ্ছেন মন্ত্রী? শেষ পর্যন্ত সভা করার সিদ্ধান্ত নেন মন্ত্রী। মঞ্চে উঠে তিনি কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমনে উদ্যোগী হন। কথা বলতে বলতে মঞ্চে ডেকে নেন তাঁর গাড়ি আটকে দাঁড়িয়ে পড়া তৃণমূল কর্মীকেও। যুবকের কাঁধে হাত রেখে বাবুল বলেন, ‘‘আমি কোন দলের মন্ত্রী? ভাল করে ভেবে বলবে’’। মঞ্চে থাকা তৃণমূল নেতৃত্ব তখন হাসছেন। সাদা শার্ট-জিনস্ পরিহিত যুবক বলেন, ‘‘তৃণমূলের।’’ বাবুল হেসে বলেন, ‘‘ভাই, একটু হলে আমার গাড়ি ভেঙে দিতে।’’

Advertisement

মন্ত্রী জানান, তিনি রাগ করেননি। বরং ওই তৃণমূল কর্মীর তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, ‘‘ভালবাসলেই তো রাগ হয়। স্বামীকে না ভালবাসলে স্ত্রী রাগ করে কেন হাতাখুন্তি ছুড়ে দেয়, বলুন? এদের যে রাগ, এদের যে কাজ করার স্পৃহা, দলের জন্য খাটাখাটনি করার যে স্পৃহা, এটাই দলকে ঐক্যবদ্ধ করবে। এই শক্তিতেই আমরা পঞ্চায়েত জয় করব।’’ তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং কর্মীকে মিলেমিশে কাজ করার বার্তা দিয়ে আবার চ্যাংরাবান্দায় সভা করতে চলে যান বাবুল।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। পরে ভবানীপুর উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রায় ১০ মাস পর রাজ্যের মন্ত্রী হন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement