বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ায় দুই মালগাড়ির সংঘর্ষ। দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে সজোরে ধাক্কা দিল অন্য একটি মালগাড়ি। এই সংঘর্ষের ফলে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির ওয়াগনের উপর উঠে যায় অন্য মালগাড়ির ইঞ্জিন। যা কয়েক সপ্তাহ আগে ওড়িশার বালেশ্বরের মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে।
রবিবার সকালে বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেশনের লুপ লাইনে বিষ্ণুপুরের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল একটি মালগাড়ি। বাঁকুড়া থেকে বিষ্ণুপুরের দিকে যাওয়া অন্য একটি মালগাড়ি সেই লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে। দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে চলন্ত গাড়িটি। মালগাড়ির গতি বেশি থাকায় তার ইঞ্জিন অপর মালগাড়ির উপরে উঠে পড়ে। দুমড়ে মুচড়ে যায় একাধিক বগি। দুই মালগাড়ির মোট ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে এই দুর্ঘটনার ফলে।
দুই মালগাড়ির সংঘর্ষের প্রচণ্ড শব্দে রবিবার ভোরবেলা ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যায়। স্থানীয়েরাই এগিয়ে এসে চলন্ত মালগাড়ির ভিতরে আটকে পড়া লোকো পাইলটদের উদ্ধার করেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মালগাড়ির এক চালকের সামান্য আঘাত লেগেছে।
এই দুর্ঘটনার জেরে ছিঁড়ে গিয়েছে ওভারহেড তার। ফলে আদ্রা-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। রেলের সিনিয়র ডিভিশনার সেফ্টি অফিসার দিবাকর মাঝি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল, আর একটি গাড়ি এসে তাতে ধাক্কা মেরেছে। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, সিগন্যালের ত্রুটি ছিল কি না, তা তদন্তের পরেই জানা যাবে। কোথাও কোনও ত্রুটি নিশ্চয়ই ছিল। তা না হলে এটা হতে পারে না। আমাদের তরফে তদন্ত করে দেখা হবে।’’
উল্লেখ্য, গত ২ জুন হাওড়ার শালিমার থেকে চেন্নাইয়ের দিকে যাওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়। ওই সময় একসঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়িও। করমণ্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে প্রচণ্ড গতিতে আসা ট্রেনটি সজোরে ধাক্কা মারে। করমণ্ডলের ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির উপরে। ট্রেনের কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়ে পাশের লাইনে ছিটকে যায়। সেই লাইন দিয়ে আসা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগিও লাইনচ্যুত হয়। এই দুর্ঘটনায় ২৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজারেরও বেশি।