Lands

চাষের জমি ভোল বদলে ‘প্লট’, ভরাট সেচখালও

মাটিতে মজে যেতে বসেছে সেচখালও। শনিবার এমনই ছবি দেখা গেল কৃষিপ্রধান পুরাতন মালদহের কৈলাসপুরে।

Advertisement
অভিজিৎ সাহা
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ০৮:২২
পুরাতন মালদহের কৈলাসপুরে সেচখাল ভরাটের ‘কাজ’। 

পুরাতন মালদহের কৈলাসপুরে সেচখাল ভরাটের ‘কাজ’।  —নিজস্ব চিত্র।

চারপাশে সবুজ আর সবুজ। সেই চাষজমির বুক চিরে চলে গিয়েছে একাধিক কংক্রিটের রাস্তা। ভোরের নিস্তব্ধতা ভেঙে সে রাস্তায় ‘দাপাদাপি’ মাটি-বোঝাই ট্রাক্টরের। কোথাও মাটি খননের কাজ, কোথাও কাজ উর্বর চাষজমি ভরাটের। মাটিতে মজে যেতে বসেছে সেচখালও। শনিবার এমনই ছবি দেখা গেল কৃষিপ্রধান পুরাতন মালদহের কৈলাসপুরে। অভিযোগ, সেতু মোড়ের এক যুব তৃণমূল নেতার মদতে বাইক-বাহিনীর প্রহরায় বেআইনি ভাবে এই ‘কাজ’ চলছে এবং আদতে তৈরি হচ্ছে ‘প্লট’।

Advertisement

কৃষিজমিতে ‘প্লট’ করতে গেলে অনুমতি প্রয়োজন ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের। দফতরের নথিতে বদলাতে হয় জমির শ্রেণি। যুবনেতার প্রভাবেই কি নীরব সংশ্লিষ্ট দফতর, উঠছে প্রশ্ন। যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন দফতরের আধিকারিকেরা। এক কর্তা বলেন, ‘‘কৃষিজমি ‘প্লট’ করার নিয়ম নেই। জমির শ্রেণি বদলাতে হলে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হয়।” মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “বেআইনি ভরাটের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে নিয়মিত। কৈলাসপুরের ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

মুচিয়া পঞ্চায়েতের কৃষিপ্রধান গ্রাম কৈলাসপুর। টাঙন নদীতে ঘেরা এলাকা ও উন্নত সেচ ব্যবস্থার কারণে সারা বছরই চাষবাস হয়। মূলত ধান, সর্ষে, গাঁদা, আনাজের চাষ। এ বার মরসুম শুরু ধানে। তবে সে সবের মধ্যেই কৃষিজমি ভরাট করে মাটির ব্যবসা শুরু হয়েছে বলেই অভিযোগ।

অভিযোগ, কৃষকদের থেকে কম দামে জমি কিনে তা ‘প্লট’ করে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। গত দু’দিন ধরে এমনই নিচু ধানজমি মাটি ফেলে ভরাটের কাজ চলছে বলে অভিযোগ। চরলক্ষ্মীপুর প্রাথমিক স্কুল লাগোয়া চাষজমি খোঁড়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “রাতভর ট্রাক্টরের শব্দে বাড়িতে থাকা দায়। মুখ ঢেকে বাইক নিয়ে গ্রামে টহল দিচ্ছে ওরা। ভয়ে সবাই চুপ।’’

ভরাট-কারবারে নাম জড়িয়েছে পুরাতন মালদহের সেতু মোড়ের এক যুব তৃণমূল নেতার। যদিও তিনি বলেন, “ভূমিসংস্কার দফতরের ডিসিআর কেটে মাটি কাটা আর ভরাটের কাজ হচ্ছে।” কিন্তু চাষজমির শ্রেণি এ ভাবে বদলানো যায়? প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। মুচিয়া পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান পলি দাস বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত বেআইনি কাজে প্রশ্রয় দেয় না। কোথাও অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হবে।”

Advertisement
আরও পড়ুন