— প্রতীকী ছবি।
মালদহের বামনগোলার হাটে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনায় রাজ্য সরকারকে ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গত বছর জুলাই মাসে চোর অপবাদ দিয়ে বামনগোলার পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনাটি ঘটে। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যে।
ঘটনার বেশ কয়েক দিন পর চাপের মুখে বামনগোলা থানার আইসি-সহ চার পুলিশ আধিকারিককে সরিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। অন্য দিকে, ঘটনা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে নালিশ জানায় বিজেপি। তার উপর ভিত্তি করে অকুস্থল পরিদর্শন করে নিগৃহীতাদের সঙ্গে কথা বলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই প্রেক্ষিতেই এ বার দুই মহিলাকে ৩ লক্ষ টাকা করে মোট ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ গেল নবান্নে।
দুই মহিলার হয়ে মালদা জেলা আদালতের আইনজীবী তথা বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত এবং মালদা জেলা আদালতের আরও এক আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে মামলা দায়ের করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশ দিয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, যদি কোনও সরকারি সংস্থা রাজ্যকে এই নির্দেশ জারি করে, নিশ্চয়ই সরকার তা খতিয়ে দেখে পালন করবে। এই রাজ্যে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। শাসকদলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপিশাসিত রাজ্যে অনেক অপরাধ হয়, কিন্তু সেখানে কোনও ক্ষতিপূরণ জোটে না।
২০২৩ সালের ২১ জুলাই রাতে মালদহের বামনগোলার পাকুয়াহাটে চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে গণপ্রহারের অভিযোগের ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। স্থানীয় সূত্রে দাবি, বামনগোলার সাপ্তাহিক হাটে গিয়েছিলেন দুই মহিলা। দরাদরির সময় তাঁরা আনাজ বিক্রেতার টাকা ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। হাটের ব্যবসায়ীরা তাঁদের ধরে মারধর করেন। সেই ঘটনা নিয়ে হইচই হতেই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। তার মধ্যে তিন মহিলা ছিলেন। বিরোধীদের অভিযোগ, দুই ‘নির্যাতিতা’কেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পুলিশ জানায়, গণপ্রহারের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা আগে বিজেপির আন্দোলনে বামনগোলার নালাগোলা ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ওই দুই ‘নির্যাতিতা’কে গ্রেফতার করা হয়েছিল।