Jadavpur University

যাদবপুরের পড়ুয়ার মৃত্যু কী ভাবে? তদন্ত শেষের আগেই লিখিত ‘রায়’ দিয়ে দিল জাতীয় শিশু কমিশন!

যাদবপুরকাণ্ডে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। সেই মতো তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার ন’জন। তবে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন দাবি করে বসল যে, ওই পড়ুয়া ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ২০:৪৪

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর কিনারা করতে জোরকদমে তদন্ত শুরু হয়েছে। নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। ন’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। লালবাজারে ডেকে বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে। বৃহস্পতিবার বয়ান নেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায়ের। সেই খুনের তদন্তের মধ্যেই জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন লিখিত ভাবে এই মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি করল। বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জুকে চিঠি পাঠিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। সেই চিঠিতেই যাদবপুরের ঘটনাকে ‘র‌্যাগিং এবং আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

গত ৯ অগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয় মৃতপ্রায় ওই ছাত্রকে। একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হয় ১০ অগস্ট। পরের দিন, অর্তাৎ ১১ অগস্ট যাদবপুর থানায় খুনের মামলা রুজু হয়। এর পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যাদবপুরের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছিল। পরে বুধবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে ছাত্রের নাম, পরিচয় প্রকাশ্যে এসে গিয়েছিল। কিন্তু পরে জানা যায়, ছাত্রটি নাবালক। বয়স ১৮ বছর পার হয়নি। তা উল্লেখ করে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন জানায়, ওই ছাত্রের উপর যৌন হেনস্থা হয়ে থাকতে পারে। সেই কারণে এই মামলায় পকসো আইনের ধারাও যুক্ত হতে পারে। সংবাদমাধ্যমের কাছে ছাত্রের নাম এবং ছবি ব্যবহার না করার অনুরোধ করেন কমিশনের উপদেষ্টা।

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠানো চিঠিতে পকসো আইন যুক্ত করার কথা বলেছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। কিন্তু সেই চিঠিতেই মৃত পড়ুয়ার নামোল্লেখ করা হয়েছে। চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্কের সই করা চিঠির ভিতরে মৃত পড়ুয়ার নাম লেখা থাকলেও তা কালো কালিতে চাপা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দু’টি চিঠিরই ‘বিষয়’ লেখার জায়গায় স্পষ্ট অক্ষরে পড়ুয়ার নাম লেখা রয়েছে (এই খবরের সঙ্গে প্রকাশিত সেই চিঠিতে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে নামটি মুছে দেওয়া হয়েছে)। ফলে প্রিয়ঙ্কের পাঠানো চিঠি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা যুক্ত থাকতে পারে এমন ঘটনায় কী ভাবে মৃত পড়ুয়ার নাম উল্লেখ করা হল চিঠিতে, যা পকসো আইন অনুযায়ী অবৈধ। দ্বিতীয় প্রশ্ন, পুলিশ যেখানে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সেখানে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হল কেন?

পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে ওই পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে বলার পাশাপাশি কী কী পদক্ষেপ করা হল তা-ও কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। জবাব দেওয়ার জন্য সাত দিন সময় বেঁধে দিয়েছে কমিশন।

Advertisement
আরও পড়ুন